Gidhni

সাতসকালে দল বেঁধে বাজারে হাতির দল

রেল স্টেশন চত্বর হয়ে হাতির দলটি যখন খেঁড়েজোড়া বাঁধের দিকে যাচ্ছে, তখন দোকানপাট ফেলে পালিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। তবে করোনা আবহেও হাতি দেখতে কৌতুহলি জনস্রোতও ছিল দেখার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গিধনি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৯
Share:

গিধনির বাজার এলাকায় হাতির পাল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

সাত সকালে জনবহুল আনাজ বাজারে আচমকা হাজির হল গোটা চারেক শাবক-সহ ১২টি হাতির দল।শনিবার সকালে জামবনির ব্লক সদর গিধনির কালী মন্দির চত্বরের আনাজ বাজারে ওই হাতির দলটিকে দেখে পড়িমরি করে ছুটে পালান অনেকে। কেউ কেউ হাতির ছবি-ভিডিয়ো মোবাইল ফোনের ক্যামেরা বন্দি করলেন। বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ালেও দিনের বেলা জনবহুল লোকালয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।

Advertisement

ঝাড়খণ্ড রাজ্যের লাগোয়া জামবনির ব্লক সদর গিধনি এলাকাটি জনবহুল। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড থেকে মাস খানেক আগে ২২টি হাতির দল গিধনি বনাঞ্চলে এসেছে। সেই দলটি রাত বিরেতে লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি করছে। শুক্রবার ভোরে গিধনি বনাঞ্চলের লালবাঁধের বড়শোলে হাতির হানায় গুরুতর জখম হন এক যুবক। রাতে সেই দলটিকে ঝাড়খণ্ডের দিকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন বনকর্মী ও হুলাপার্টির সদস্যরা। বৃষ্টির জন্য হাতি খেদানোর কাজ বাধা পায়। শনিবার ভোরে গিধনির লাগোয়া কানাইশোলের জঙ্গলে হাতির দলটিকে আটকে ঘুরপথে ঝাড়খণ্ডের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু হাতি দেখতে সেখানে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার জনতার চিৎকার চেঁচামেচিতে সেই চেষ্টাও বাধা পায়।

এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দলের ১২টি হাতি দিকভ্রষ্ট হয়ে গিধনি সাঁওতাল পাড়া প্রাথমিক স্কুলের ঢালাই রাস্তা দিয়ে লোকালয়ে ঢোকে। যাওয়ার পথে একটি বাড়ির পাঁচিলের গ্রিলের দরজাও ভাঙে তারা। এরপরে রেল কলোনি হয়ে পূর্বাশা মাঠের ধার বরাবর পিচরাস্তা ধরে হাতির দলটি দ্রুত পায়ে গিধনি কালী মন্দির এলাকার আনাজ বাজারে হাজির হয়। সকাল তখন ৯টা ১০ মিনিট। স্কুলশিক্ষক অমিয়রঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘সবে বাজার করতে ঢুকেছি। আচমকা হইহট্টগোল। কোনও মতে সাইকেল নিয়ে ছুটে পালাই।’’ হাতিরা অবশ্য আনাজ খায়নি। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শাবক নিয়ে দ্রুত পায়ে লোকালয় থেকে যেন বেরিয়ে যেতে চাইছিল হাতিরা। তবে লোকজনের হট্টগোলে মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে দলের পিছনে থাকা একটি পুরুষ হাতি মাঝে মধ্যেই রুখে দাঁড়াচ্ছিল।

Advertisement

রেল স্টেশন চত্বর হয়ে হাতির দলটি যখন খেঁড়েজোড়া বাঁধের দিকে যাচ্ছে, তখন দোকানপাট ফেলে পালিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। তবে করোনা আবহেও হাতি দেখতে কৌতুহলি জনস্রোতও ছিল দেখার মতো। হাতির দলটি একটি আশ্রমের মেন গেট ঠেলে ভিতরে ঢুকে আশ্রমের আম-বকুল গাছের আড়ালে ঠায় পৌনে একঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ এসে লোকজনকে আশ্রম চত্বর থেকে বের করে দেয়। বনকর্মী ও হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে সকাল সাড়ে ১০ টা হাতিরা আশ্রমের পিছনের পাঁচিল ভেঙে শালিকার জঙ্গলে ঢুকে যায়।

ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘লোকজন হাতিকে বিরক্ত করায় হাতিরা দিকভ্রষ্ট হচ্ছে। দলটিকে ঝাড়খণ্ডে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এদিন লোকালয়ে হাতি ঢুকলেও সে রকম কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement