টিনের ছাউনি দেওয়া সামনে পতাকা লাগানো পুরসভার পার্কের কাছে এই জায়গা দখলের অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার পার্কের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে রাতারাতি পার্টি অফিস তৈরির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করল তৃণমূলেরই পরিচালিত এগরা পুরসভা। গোটা ঘটনার পিছনে দলের জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতির মদত রয়েছে বলে পুরপ্রধানের দাবি।
এগরা পুরসভায় যাওয়ার রাস্তায় কৃষ্ণসাগর পুকুর পাড়ে পূর্ত দফতরের ৯ ডেসিমাল জায়গা রয়েছে। ২০১৬ সালে পুর এলাকায় সৌন্দর্যায়নের জন্য জেলা পরিষদ ওই জায়গা থেকে সাড়ে আট ডেসিমাল জায়গা পুরসভাকে লিজ দেয়। বাকি জায়গা স্থানীয় এক ব্যক্তিকে লিজ দেয় জেলা পরিষদ। লিজ নেওয়া সেই জায়গায় বয়স্কদের জন্য পার্ক তৈরিতে তৎকালীন রাজ্য পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী পরিবহণ দফতর থেকে পুরসভাকে পঁচাত্তর লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। সেই টাকায় পার্ক তৈরি হয়েছে। বাকি জায়গায় পুরসভা ভবিষ্যতে পার্কে আসা বয়স্ক মানুষদের জন্য পানীয় জল ও শৌচালয় নির্মাণের পরিকল্পনা করে।
অভিযোগ, লিজ নেওয়া ওই জায়গা শনিবার রাতে এগরা শহর তৃণমূল নেতৃত্ব দখল করে পার্টি অফিস তৈরির কাজ শুরু করে। পুরসভার তরফে বাধা দিলেও কাজ বন্ধ করা হয়নি। পুরসভার অভিযোগ, লিজ নেওয়া সাড়ে আট ডেসিমাল জায়গার মধ্যে কিছু অংশে পার্ক তৈরি হয়েছে। বাকি জায়গা পড়ে ছিল। সেই জায়গায় জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক চক্রান্ত করে নতুন করে শহর তৃণমূলের সভাপতিকে লিজ দিয়েছেন। যা বেআইনি। এর পিছনে রয়েছেন কাঁথি সাংগঠনিক তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি। লিজ নেওয়া জায়গা দখল করে পার্টি অফিস তৈরির অভিযোগ তুলে পুরসভার তরফে রবিবার হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়েছে। পুরসভার তরফে জেলাশাসক এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, গত ২ জুন জেলা পরিষদের তরফে এগরা শহর তৃণমূলের সভাপতি উদয় পালকে ওই জায়গায় লিজ দেওয়া হয়। সেই হিসেবেই শহর তৃণমূলের সভাপতি সেখানে পার্টি অফিস তৈরি করছেন বলে দাবি তৃণমূলের। উদয় বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের তরফে আমাকে লিজ দেওয়া জায়গায় আমি বাড়ি তৈরি করছি। যদি কোনও সমস্যা থাকে তাহলে জেলা পরিষদকে তার সমাধান করতে হবে।’’
পুরপ্রধান স্বপন নায়ক বলেন, ‘‘জেলা পরিষদ ২০১৬ সালে এগরা পুরসভাকে ওই জমি লিজ দিয়েছিল। লিজ দেওয়া জমি ফের জেলা সভাধিপতি ও তরুঁ মাইতিরা বেআইনিভাবে তৃণমূলের এক নেতাকে লিজ দিয়েছে। সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিস হচ্ছে। পুরসভার তরফে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি।’’
জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, ‘‘এমন ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’