পাঁচশো বছরের চতুর্ভুজা মহিষাসুরমর্দিনী। —নিজস্ব চিত্র।
দেবীর পুজোয় বাজে না ঢাক-কাঁসর। প্রায় পাঁচশো বছর আগে দেবীবিগ্রহ পাওয়ার পর মিলেছিল স্বপ্নাদেশও। এরপর থেকে ঘণ্টা ও শাঁখ বাজিয়েই দেবীর ষোড়শোপচারে পুজো ও আরতি হয় আজও।
বহু বছর আগের কথা। তখন পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর জেলার সোনারং গ্রামে ‘বিশারদ’ সেনগুপ্তদের পারিবারিক কুলদেবীর পুজোর জাঁকজমক ছিল দেখার মতো। অষ্টধাতুর চতুর্ভুজা মহিষাসুরমর্দিনীর সেই প্রাচীন বিগ্রহের বার্ষিক পুজো আজও হয়। তবে পূর্ববঙ্গের সোনারং গ্রামে নয়, এখন পুজো হয় অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামে!
কয়েক শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোয় এখন আর সোনা রংয়ের জমিদারির জাঁক নেই। কালের বিবর্তনে দেবী বিগ্রহ ক্ষয়ে গিয়েছে। তবে নিষ্ঠা আর আন্তরিকতা আজও অমলিন। বল্লাল সেনের অন্যতম সভাকবি কামদেবের বংশধরেরা পরবর্তী-কালে বিক্রমপুরের সোনারং গ্রামে বসবাস শুরু করেন। কামদেবের উত্তরসূরিদের পারিবারিক পেশা ছিল কবিরাজি। পূর্বপুরুষরা ‘বিশারদ’ উপাধিতে ভূষিত হতেন। সে জন্য পরিবারটিকেও বিশারদ পরিবার নামেই চিনতেন ঢাকা-বিক্রমপুরের তামাম বাসিন্দারা। জনশ্রুতি, প্রায় পাঁচশো বছর আগে বিশারদ পরিবারের এক সদস্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে স্থানীয় মঘাইদিঘিতে জাল ফেলে অষ্টধাতুর চতুর্ভুজা মহিষাসুরমর্দিনীর বিগ্রহটি পেয়েছিলেন। একই সঙ্গে ওই দিঘি থেকেই মিলেছিল অষ্টধাতুর রাধাগোবিন্দের বিগ্রহ, নারায়ণ শিলা, শঙ্খ, ঘণ্টা ও তামার পুষ্পপাত্র। প্রায় পাঁচশতাব্দী ধরে মহিষাসুরমর্দিনী, রাধাগোবিন্দ ও নারায়ণ শিলার নিত্যসেবায় আজও কোনও
ছেদ পড়েনি।