আমলাশোলে দুয়ারে রেশন প্রকল্প। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’দশক আগের ছবিটা এখন অনেক ঝাপসা বেলপাহাড়ির আমলাশোলে। ২০০৪ সালে ঝাড়গ্রামের ওই এলাকায় পাঁচ জনের অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ শোরগোল ফেলে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। যার প্রেক্ষিতে আমলাশোলের সঙ্গে ওড়িশার কালাহান্ডির তুলনা করতে থাকেন অনেকে। বুধবার সেই আমলাশোলেই শুরু হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের পাইলট প্রজেক্ট। রাজ্যে ২০১১ সালে নতুন সরকার আসার পর থেকে বদল শুরু হয়েছে আমলাশোলেও। ‘দুয়ারে রেশন’ নিয়ে এখন নতুন প্রাপ্তির আনন্দ বেলপাহাড়ির ওই শবর গ্রামে।
বুধবার সকালে বৃষ্টি হচ্ছিল আমলাশোলে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই আমলাশোলে গাড়িতে চড়ে রেশন সামগ্রী নিয়ে হাজির হন সরকারি আধিকারিকরা। রেশন নিতে উপস্থিত হয়েছিলেন আমলাশোলের বাসিন্দা টুবলু শবর। ২০০৪ সালে মারা গিয়েছিলেন তাঁর বাবা এবং দিদি। টুবলু বলেন, ‘‘আমার বাবা এবং দিদি মারা গিয়েছিল না খেতে পেয়ে। তখন অনেক দূরে রেশন দোকান ছিল। কেউ যেত না। এখন অসুবিধা কিছু নেই। বাড়িতে রেশন পেয়ে ভাল লাগছে। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে না। মাসে মাসে পেয়ে যাচ্ছি। কারও খাবারের অভাব নেই।’’ বুধবার রেশন পেয়েছেন আমলাশোলের পুতুল মুর্মু, লুলুমণি মানকি, বুধু শবর, সুখদেব মুড়ার মতো অনেকেই। টুবলুর মতো খুশি তাঁরাও।
বুধবার আমলাশোলে যান খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জোৎস্না মান্ডি। তিনি ছয় থেকে সাতটি পরিবারের হাতে তুলে দেন এক মাসের চাল, ডাল এবং আটা। পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘রেশন সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আগে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে রেশন নিতে হত। এখন বাড়ির কাছে রেশন দোকান পৌঁছে যাওয়ায় উপকৃত আমলাশোলবাসী।’’ মন্ত্রী জানিয়েছেন, আপাতত ৫০ শতাংশ ডিলারকে নিয়ে শুরু হয়েছে এই পাইলট প্রজেক্ট। আগামী দিনে সব ডিলারই ওই প্রকল্পে যোগ দেবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
ঝাড়গ্রাম জেলার খাদ্য নিয়ামক মিঠুন দাস বলেন, ‘‘৮টি ব্লক এবং একটি পুরসভায় ৫৪ জন রেশন ডিলার অংশ নিয়েছেন ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচিতে। আমলাশোল গ্রামে বাড়ি বাড়ি রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’’