পিংলার সভায় দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
আজ, শনিবার মেদিনীপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেই সদ্য তৃণমূলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান প্রায় নিশ্চিত। তার আগে শুক্রবার জেলায় এসে তৃণমূলের ‘লড়াকু’দের জন্য দরজা বড় করে রাখার কথা বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় ‘কৃষক আইনের সমর্থনে’ সভায় যোগ দেন দিলীপ। ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সহ-সভানেত্রী ভারতী ঘোষরাও। সভার আগে ব্লকের মণ্ডলবাড় থেকে পদযাত্রায় পা মেলান উপস্থিত সকলে। অমিত শাহের জনসভার আগের দিন এই সভা ঘিরে বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ ছিল নজরকাড়া। থানার অদূরে সভার মাঠ ছিল কানায়-কানায় পূর্ণ। সেই মাঠেই শুভেন্দু-সহ একঝাঁক তৃণমূল নেতার বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উস্কে দিলীপ বলেন, “তৃণমূলের মধ্যে যাঁরা লড়াকু, কাজের লোক রয়েছেন তাঁরা বিজেপিতে আসছেন। আমি আহ্বান করছি যাঁরা বাংলার গরিমা, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে চান আসুন। দরজা বড় করে রেখেছি। আপনি যোগ্য সম্মান, মর্যাদা পাবেন। আর সবার পরিশ্রমে বাংলা আবার সোনার বাংলা হবে।” একই সুরে লকেটও বলেছেন, “তৃণমূলে ভাঙন শুরু হয়েছে। যাঁরা মানুষের জন্য কাজ করেন বিজেপিতে তাঁদের সকলকে স্বাগত জানাই।”
এ দিনের সভা কৃষক আইনের সমর্থনে হলেও তৃণমূলকে খোঁচা দিতে বারবার ভাঙনের প্রসঙ্গ টেনেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। লকেটের কথায়, “কালবৈশাখী দেখেছেন? ঝড়ে পাকা আম পড়ে। তেমন এক-একটা করে আম পড়তে শুরু করেছে। কালকে এই নেতা, পরশু অমুক মন্ত্রী, কোনও সাংসদ, কাউন্সিলর পড়ছে। এর পরে জোড়াফুলে থাকবে শুধু পিসি ও ভাইপো।” দিলীপেরও কটাক্ষ, “টালির বাড়িতে রোজ টালি খুলে পড়ছে। রোজ একটা নেতা পালিয়ে যাচ্ছে। সকালে একজনকে বোঝাতে গেলে বিকেলে একজন পালিয়ে যাচ্ছেন।” তবে তাঁরা যে তৃণমূলকে ভাঙাচ্ছেন না তা স্পষ্ট করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, “দিদিমনিণি বলছেন, বিজেপির লোকেরা আমার লোককে ভাঙিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কী দায় পড়েছে আমাদের? এমনিতেই এত লোক পালাচ্ছে ওখান থেকে আমরা সামলাতে পারছি না।”
একসময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ বলে সম্বোধন করা ভারতী ঘোষের পরিস্থিতি বোঝাতে দিলীপ এ দিন বলেন, “আপনার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মানুষ আজ বিজেপিতে আসছে। এই যে ভারতীদি। তাঁকে একবছর বাংলা ছাড়া করেছিল। আমাকে একজন বললেন, যিনি দিদিকে ‘মা’ বলেছেন তিনি মায়ের ভোগে চলে গিয়েছেন।”
এ দিন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে ও নাম না করে বিঁধেছেন দিলীপ। তিনি বলেন, “দিদিমণি এখন বিহার থেকে ৫০০কোটি টাকা দিয়ে একজনকে ভাড়া করেছেন। কার টাকা? আমাদের ট্যাক্সের টাকা। তিনিই বুদ্ধি দিয়েছেন দুয়ারে সরকার করার। কিন্তু এখন সরকার কোথায়? যমের দুয়ারে!”