Dilip Ghosh

বিজয়ায় তরোয়াল, কাঁচা বাঁশ

বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপ। রেলশহরের সাউথসাইড এলাকায় চা-চর্চাতেও বসেন তিনি। এর পরে গ্রামীণের ভেটিয়ায় আরও একটি বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর ও কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১০
Share:

কেশিয়াড়িতে দিলীপ। নিজস্ব চিত্র

রামনবমীর অস্ত্র সংবরণ উধাও বিজয়ায়।

Advertisement

কথায় তিনি কচুকাটা করেন বিরোধীদের। শাসক শিবির বলে, বাক সংযম নাকি তাঁর অভিধানে নেই। তিনি দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ। এ হেন দিলীপ নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বার রামনবমীতে অস্ত্র সংবরণ করেছিলেন। অর্থাৎ অস্ত্র হাতে তুলে তা প্রদর্শন থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে তরোয়াল ধরলেন দিলীপ। বুধবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরে পৌঁছন মেদিনীপুরের সাংসদ। যোগ দেন ১৮নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সেটেলমেন্টে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর সভায়। সেখানে দিলীপকে বরণ করে নেন দলের নেতা-কর্মীরা। প্রথমে মাথায় পরিয়ে দেন পাগড়ি। তার পরে দলের নেতারা হাতে ধরিয়ে দেন তরোয়াল। সেই তরোয়াল হাতে ধরে মঞ্চে থেকেই প্রদর্শন করেন দিলীপ। এই ঘটনা ঘিরে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বেঁধেছে। খড়্গপুরের তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আদালত অস্ত্র হাতে ধরে প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অনেক আগেই। সেখানে একজন সাংসদ যে ভাবে হাতে তরোয়াল ধরে প্রদর্শন করছেন তাতে সমাজ কী শিখছে। এটাই বিজেপির সংস্কৃতি।’’ পাশাপাশি প্রদীপ যোগ করেন, ‘‘শহর যখন উৎসবের আনন্দে ভাসছে, আমরা সুষ্ঠুভাবে কার্নিভাল আয়োজন করেছি সেখানে দিলীপ ঘোষ অস্ত্র ধরে সেই পরিবেশকে অশান্ত করতে এ সব করছেন।” যদিও এমন ঘটনায় তৃণমূলের নেতাদের ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেন, “আমি চিরদিন তরোয়াল ধরি। যাঁদের হাত কাঁপে তাঁরা তরোয়াল ধরতে পারে না। যাঁরা চোর-ডাকাত তাঁরা আমার হাতে তরোয়াল দেখে ভয় পায়।”

বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপ। রেলশহরের সাউথসাইড এলাকায় চা-চর্চাতেও বসেন তিনি। এর পরে গ্রামীণের ভেটিয়ায় আরও একটি বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেন। অবশ্য বিজয়া সম্মিলনী থেকে চা-চর্চায় বেরিয়ে নানা প্রসঙ্গে বারবার তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছেন তিনি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই বিষয়ে দিলীপ বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জোর করে উপাচার্য নিয়োগ করছেন তখন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল প্রতিবাদ করেছিলেন। সই করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন জানেন না, আইন মানেন না। কেন সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসিয়েছিলেন? কারণ তাঁকে পিএইচডি ডিগ্রি নিতে হবে। সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে হবে। এর জন্যই আজ কানমোলা খেতে হচ্ছে।”

Advertisement

এ দিন কেশিয়াড়ির বনদেউলীতেও দলের বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দিয়েছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। সেখানে অবশ্য তরোয়াল না ধরলেও কথার ধারে কাটার চেষ্টা করেছেন শাসক শিবিরকে। সিবিআই, ইডি যাঁদের ধরছে, জেলে দিচ্ছে তাঁদের আধুনিক যুগের ‘রাক্ষস’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তৃণমূলের সরকারকে ‘ভিখারি’, ‘লুটের’ সরকার বলেও মন্তব্য করতে শোনা যায়।

সামনে পঞ্চায়েত ভোট। বিজয়া সম্মিলনীগুলিকে সামনে রেখে ভোটের প্রস্তুতি সারছেন দিলীপ। ফের একবার তিনি কর্মীদের ‘কাঁচা বাঁশ’ তৈরি রাখার নিদান দিয়েছেন।

তরোয়াল থেকে বাঁশ। বিজয়ার শুভেচ্ছায় বাদ নিরস্ত্রীকরণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement