ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। প্রতীকী চিত্র।
গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পাম্প হাউসের মধ্যে সেখানকার এক কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। রবিবার রাতের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সন্তু প্রধান (৪০)। তাঁর বাড়ি গোপীবল্লভপুর থানার সমাধি পাড়ায়। সন্তু একটি সংস্থার অধীনে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি পাম্প অপারেটরের দায়িত্বে ছিলেন। হাসপাতালে কাজ করার পাশাপাশি মামাতুতো দাদুর মাইকের ব্যবসাও দেখভাল করতেন তিনি। ছিলেন গোপীবল্লভপুর মাইক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে বেলিয়াবেড়া থানার নেকড়াশুলিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন সন্তু। বিকেলে সেখান থেকে বের হন। ফের নেকড়াশুলিতে ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরেননি। রাত সাড়ে আটটা বেজে যাওয়ার পরেও না ফেরায় বার বার ফোন করেন তাঁর স্ত্রী। তবে ফোন ধরেননি সন্তু। এরপরে তাঁর সহকর্মীরা নাইলন দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ দেখতে পান। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে দেহ পাঠানো হয়। সোমবার পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি রবিবার রাতে তাঁর সহকর্মীকে ফোন করে তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। তারপরে এই ঘটনা কীভাবে ঘটল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার বিদ্যুৎ পাতর বলেন, ‘‘বিষয়টি থানায় জানানো হয়েছিল। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা মাইক ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অনিমেষ বসুধর বলেন, ‘‘দেহটি যেভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা গিয়েছে, তাতে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না। সাংগাঠনিক ভাবে আমরা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এই মৃত্যুর কারণ জানতে চাইব।’’ সন্তুর মামাতুতো দাদু শ্রীকান্ত জানার প্রশ্ন, ‘‘বেলিয়াবেড়ায় জঙ্গল ছেড়ে হাসপাতালে আত্মহত্যা করতে এল! হাসপাতালে এত লোকজন থাকা সত্ত্বেও কী করে আত্মহত্যা করল সেটাও বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, সন্তুর বাজারে ধার-দেনা হয়ে গিয়েছিল। এই মৃত্যুর পিছনে সেটিও অন্যতম কারণ হতে পারে। শ্রীকান্তের অবশ্য দাবি, ‘‘সন্তুর বাজারে ধার-দেনা ছিল না।’’ সন্তুর খুড়তুতো ভাই শমিত প্রধানও বলেন, ‘‘কী কারণে এই ঘটনা তা বুঝতে পারছি না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। গোপীবল্লভপুরের এসডিপিও কৃষ্ণগোপলা মিনা বলেন, ‘‘অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত জানা যাবে।’’