ছবি এএফপি।
ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনও। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে প্রশাসনিক মহলের অনুমান, জেলায় ঝড়ের বড়সড় প্রভাব না পড়লেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার দিনভর মেঘলা আকাশ দেখে শঙ্কায় রয়েছেন বাসিন্দারাও।
জেলার সব ব্লকেই খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবকদের। কারণ, গত কয়েক বছরের ভারী বৃষ্টিতে জেলার সাঁকরাইল ব্লকের ডুলুং নদীর তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু গ্রাম এবং সুবর্ণরেখা তীরবর্তী গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম ব্লকের কিছু এলাকার মানুষ জলবন্দি হয়েছিলেন। বিশেষত, নাগাড়ে ভারী বৃষ্টি হলেই সাঁকরাইল ব্লকের ডুলুং ও বাঁশিখালের সংযোগস্থল এলাকার রোহিনী, আঁধারি ও রগড়া অঞ্চলের ১৫টি গ্রামের মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েন। গত বছর ফণীর দাপটেও ওই গ্রামগুলিতে জল ঢুকে গিয়েছিল। তাই এবার ‘আমপানে’র কথা মাথায় রেখে সোমবারই অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের ৮ জনের দল ও দু’টি স্পিড বোট জেলায় এসে পৌঁছেছে। এ ছাড়া জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের হাতেও রয়েছে দু’টি স্পিড বোট।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ভারী বৃষ্টির ফলে জলবন্দি অবস্থা হলে দুর্গতদের উদ্ধার ও খাবার, পানীয় জল ও ওষুধ পৌঁছনোর জন্য বোটগুলি ব্যবহার করা হবে। জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অধীনে জেলার ৮টি ব্লকে রয়েছেন তিনশোরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক। গত কয়েক বছরে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে প্রয়োজনে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের সব স্তর সতর্ক রয়েছে।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ‘মেন্টর’ সোমনাথ মহাপাত্র বলেন, ‘‘সাঁকরাইল ব্লকে ৫টি ফ্লাড সেন্টার রয়েছে। সেগুলি পরিষ্কার হচ্ছে। প্রয়োজনে সেখানে দুর্গতরা থাকতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ত্রিপল ব্লকে পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’’
‘আমপানে’র প্রভাব পড়বে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন ব্লকে। জেলার মোহনপুর ও দাঁতন ১ ব্লকে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। দুই ব্লকের মানুষকে সতর্ক করতে মঙ্গলবার মাইক প্রচার চালায় প্রশাসন। দাঁতন ১ প্রশাসন সূত্রে খবর, কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রায় দশ হাজার কাঁচা বাড়ি আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থাও সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। ব্লকের স্কুলগুলিতে মানুষকে রাখার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন।
সোমবার সোনাকোনিয়াতে এসে দাঁতন ও মোহনপুর ব্লককে বাড়তি সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছিলেন জেলা শাসক রশ্মি কমল। মোহনপুর ব্লক প্রশাসন জানাচ্ছে, প্রত্যেক পঞ্চায়েত এলাকাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। চিড়ে, মুড়ি, গুড়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মোহনপুর বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রয়োজনে গ্রুয়েল (দানাশস্য) কিচেন খোলার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। সবরকম প্রস্তুতি আছে। আশা করি কোনও অসুবিধে হবে না।’’