প্রতীকী ছবি।
এক বার নয়, দু’বার নয় তৃতীয়বার। এবারও হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের অভিযুক্ত তথা বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের জামিনের আবেদন। তবে তার অনুগামীরা হাইকোর্টের রায়ের আগেই তাকে স্বাগত জানাতে ফ্লেক্স দিয়ে বৃহস্পতিবার সাজিয়ে দিয়েছিল পাঁশকুড়া শহর।
এক বছর আগে নিহত কুরবানের খুনের মামলায় মেদিনীপুর জেলে বন্দি রয়েছে আনিসুর। এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আশিস কুমার চক্রবর্তী এবং বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে তার জামিনের শুনানি ছিল। আনিসুরের আইনজীবী আদালতে জানান, আনিসুর অসুস্থ এবং সে নির্দোষ। জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী। প্রায় ৪৫ মিনিট উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর দুই বিচারপতি আনিসুরের জামিন নাকচ করে দেন। এর আগেও দু’বার হাইকোর্টে ওই আবেদন নাকচ হয়েছে।
কুরবান শা হত্যা মামলার তদন্তকারী অফিসার অজয় মিশ্র বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টে আনিসুর রহমান জামিনের আবেদন করেছিল। বিচারক সমস্ত কিছু শোনার পর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন।’’ এই মুহূর্তে কুরবান হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে পূর্ব মেদিনীপুরের তিন নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে। এই মামলায় আনিসুর-সহ মোট আটজন জেলবন্দি।
হাইকোর্টের রায়ের দু'দিন আগেই অবশ্য পাঁশকুড়ায় রটে রটে যায়, এ দিন জামিনে ছাড়া পাবে আনিসুর। আর ছাড়া পেয়ে সে যোগ দেবে তৃণমূলে। সেই মতো আনিসুরের অনুগামীরা এ দিন সকাল থেকে পাঁশকুড়া পুরসভার ১৫, ১৬, ১২ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন জায়গায় তাকে স্বাগত জানিয়ে প্রচুর ফ্লেক্স লাগায়। ফ্লেক্সে লেখা ছিল, ‘স্বাগতম আনিসুর রহমান। সৌজন্যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড ও পাঁশকুড়া শহরবাসী’। আনিসুর এই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও বটে। তার জামিন নামঞ্জুর হয়ে যাওয়ায় হতাশ পড়েন অনুগামীরা।
আনিসুরের এ রকম অভ্যর্থনার প্রস্তুতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত কুরবানের দাদা আফজল শা। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার এক প্রভাবশালী নেতা আনিসুরকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সেই বার্তা পেয়ে আনিসুর অনুগামীরা শুনানির আগেই পাঁশকুড়া শহর জুড়ে ফ্লেক্স দিয়েছে। খুনের মামলায় অভিযুক্তকে যদি কেউ আড়াল করতে চান, তাহলে এর থেকে দুর্ভাগ্যের আর কিছু হয় না। তবে বিচার ব্যবস্থার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ কিন্তু কলকাতার কোন নেতা কুরবান হত্যা মামলায় প্রভাব খাটাচ্ছেন, তা অবশ্য খোলসা করেননি আফজল।