চলছে গাছের ছায়ায় চুল কাটা।
‘গ্রিন জোনে’ ছাড় মিলেছে। কিন্তু ‘রেড জোনে’ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া অন্য কোনও দোকান খোলায় ছাড় মেলেনি।
এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পেশার মানুষের রুজিরুটিতে টান পড়েছে। সংসার সামলাতে অনেকেই যেমন পেশাবদল করেছে, তেমনই অনেকে নিজের পেশাতে থেকেই অর্থ উপার্জনের অভিনব পন্থা বার করেছেন। যেমন এগরার বিভিন্ন ক্ষৌরকারেরা চুল কাটার ‘হোম ডেলিভারি’ চালু করেছেন। ফোন করলেই বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিচ্ছেন তাঁরা।
এগরার অধিকাংশ ওয়ার্ড রেড জোনের পাশাপাশি, কনটেনমেন্ট জোনের (গণ্ডিবদ্ধ এলাকা) মধ্যেও পড়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী পটাশপুর গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে পড়ছে না। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সেলুন কর্মীরা বাড়িতে বা ঘরের বাইরে কোনও নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গায় গিয়ে চুল কেটে আসছেন। পটাশপুরের কসবা, টেপড়পাড়া এলাকায় এই পরিষেবা বেশি দেখা যাচ্ছে। নিয়ম ভেঙে এগরার শহরের কিছু কিছু এলাকাতেও ওই কাজ করছেন ক্ষৌরকারেরা।
এগরার চন্দন বেজ পেশায় ক্ষৌরকার। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় প্রথমে করোনার প্রভাব দেখা গিয়েছিল এগরাতেই। ফলে এখানে মানুষ নিত্য জিনিস কিনতে বাজারে বেরোলেও চুল-দাঁড়ি কাটতে সেলুনে আশছেন না। গত দু’মাস ধরে দোকান বন্ধ থাকায় রোজগারও বন্ধ। সংসারে অভাব অনটন এখন নিত্যদিন। বাধ্য হয়ে হোম সার্ভিসের মতো বিকল্প পথ দেখতে হচ্ছে।’’ অন্য এক সেলুন কর্মী জানাচ্ছেন, পরিচিত গ্রাহকেরা তাঁদের ফোন করে ডেকে নিচ্ছেন। এছাড়া, নিজেদের সুবিধা মতো তাঁরা এক একটি গ্রামে সপ্তাহে এক থেকে দু'দিন করে যাচ্ছেন। দোকানে গ্রাহক এলে যেখানে দিনে ৪০০-৫০০ টাকার উপার্জন হত, তা হয়তো কমেছে। কিন্তু এই মন্দার বাজারে দিনে দু' আড়াইশো টাকাই বা কম কিসে!
কিন্তু এভাবে অচেনা লোকের সংস্পর্শে আসালে তো সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে? সেলুন কর্মীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা গ্রামে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গা বেছে নেন। সেখানে খুব বেশি হলে ছয় থেকে সাত জন করে লোককে আসকে বলেন। কোথাও আবার গ্রামের বাইরে জঙ্গলের ধারে চুল কাটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে একে একে চুল কাটা পরে গ্রাহকেরা যেমন পুকুরে চান করে বাড়ি ফেরেন, তেমনই সেলুন কর্মীরাও কাজ শেষে স্নান না করে বাড়ি ঢোকেন না বলে দাবি তাঁদের।