বৃহস্পতিবার গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে টিকাকরণ বন্ধ থাকলেও করোনা পরীক্ষা হয়। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিষেধক অমিল। গড়বেতা ও গোয়ালতোড় গ্রামীণ হাসপাতালে তাই করোনার টিকাকরণ বন্ধ হয়ে গেল বৃহস্পতিবার থেকে। তবে টিকাকরণ থমকালেও, করোনার নমুনা পরীক্ষায় জোর দিয়েছেন দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই।
গোয়ালতোড় (গড়বেতা ২) ব্লক স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যা প্রতিষেধক মজুত ছিল, তা বুধবার পর্যন্ত দেওয়া হয়ে গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে দূরবর্তী আমলাশুলির বাবুইডাঙা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রেও দু'দিন শিবির করে প্রতিষেধক দেওয়া হয় অগ্রাধিকার শ্রেণির (প্রায়োরিটি গ্রুপ) মানুষদের। জোগানে টান পড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতাল ও আমলাশুলির এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে ব্লক স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। একইভাবে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে এদিন নোটিস ঝুলিয়ে বলা হয়েছে — ‘কোভিড ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতার জন্য ১০ জুন থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ থাকবে।’
এ দিন গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল ও গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতিষেধকের জন্য এসে নোটিস দেখে হতাশ হন অনেকেই। অনেকের দ্বিতীয় ডোজ়ের নির্দিষ্ট দিন। তাঁরাও এসে ঘুরে যান। ফিরতে হয় প্রবীণদেরও। দুটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই জানিয়েছে, টিকা এলেই ফের চালু করা হবে টিকাকরণের কাজ।
টিকাকরণ থমকে গেলেও, গতি বেড়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষার। প্রতিদিনই গোয়ালতোড় ও গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে দীর্ঘ লাইন পড়ছে সব বয়সীদের। গোয়ালতোড়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিকাশ সিংহ বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষা এখন দ্বিগুণ বেড়েছে। আগে যেখানে ৬০-৬৫ টি হত, এখন সেখানে রোজ ১১৫-১২০টি পরীক্ষা হচ্ছে। আমরাও পরীক্ষার আরও গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। অ্যান্টিজেন টেস্ট যেমন হচ্ছে, প্রয়োজনে আরটিপিসিআর-ও করা হচ্ছে।’’ তিনি মানছেন, ‘‘আগে জোর করে ডেকে এনে পরীক্ষা করাতে হত। এখন অনেকে সামান্য উপসর্গ বুঝতে পারলে নিজেরাই হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করাচ্ছেন। ভাল লক্ষণ।’’
একসময় করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির হার তরতরিয়ে বাড়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছিল জঙ্গলমহলের এই ব্লকে। তবে গত এক সপ্তাহে সেই হার অনেকটাই কমায় স্বস্তিতে গোয়ালতোড় ব্লক স্বাস্থ্যদফতর। বিএমওএইচ বলেন, "সংক্রমণের হার যেখানে ২০ শতাংশের বেশি হয়ে গিয়েছিল, এখন কমে ৫ শতাংশের মতো হয়েছে। এটা স্বস্তিদায়ক।" সংক্রমণের হার কমেছে গড়বেতাতেও। মে মাসের শেষ দশ দিনে এই ব্লকে সংক্রমিতের সংখ্যা একশো ছুঁলেও, জুনের প্রথম দশ দিনে তার অর্ধেকও হয়নি। তবুও নমুনা পরীক্ষায় ঢিলে দিচ্ছে না ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। গড়বেতা ১-এর যুগ্ম বিডিও শিলাদিত্য জানা ও বিএমওএইচ সঞ্চিতা কর্মকার বলেন, ‘‘গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে পরীক্ষার দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগে ১০০-১২০ জনের পরীক্ষা হত, এখন ২০০ জনেরও বেশি পরীক্ষা হচ্ছে। অ্যান্টিজেন, আরটিপিসিআর দুই-ই হচ্ছে।’’