প্রতীকী ছবি
দিন কয়েক আগেই রোগীশূন্য হয়েছিল পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার ফের খাতা খুলল বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক আরপিএফ কনস্টেবল। মেচেদায় কর্মরত ওই কনস্টেবল নদিয়ার তাহেরপুর এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে, ঘাটালের এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাঁকেও বড়মায় পাঠানো হয়েছে।
আরপিএফ সূত্রের খবর, গত ১৮ মার্চ ওই কনস্টেবল কর্মসূত্রে খড়গপুর যান। সেখান থেকে ১৯ মার্চ তিনি-সহ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ২৬ জন আরপিএফ জওয়ান অস্ত্র আনার জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন। অস্ত্র নিয়ে ১৪ মার্চ তাঁরা খড়্গপুরে ফিরে আসেন। তাঁদের সঙ্গে ছুটিতে থাকা আরও দুই জওয়ান একই ট্রেনে খড়গপুরে ফিরেছিলেন। এরপর তাঁরা যে যাঁর কর্মস্থলে গিয়ে কাজে যোগ দেন।
গত ২০ এপ্রিল ওই দলের একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে কটকের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। বিষয়টি সামনে আসার পরেই তাঁর সংস্পর্শে আসা ১৮ জনকে ২১ এপ্রিল খড়গপুরের রেল হাসপাতালে নিভৃতবাসে (কোয়রান্টিন) পাঠানো হয়। একজন অন্য শারীরিক অসুবিধার কারণে গার্ডেনরিচ রেল হাসপাতালে ভর্তি হন। দিল্লি ফেরত বাকিদের কর্মস্থলেই নিভৃতবাসে রাখা হয়। প্রত্যেকেরই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
গত ২১ এপ্রিল মেচেদা আরপিএফের ওই কনস্টেবলের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। বুধবার রাতে তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। ওই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁকে হয় মেচগ্রামের বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বড়মা হাসপাতালের টেকনিক্যাল অফিসার দেবোপম হাজরা বলেন, ‘‘মেচেদা আরপিএফের এক কনস্টেবলের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ওঁকে রাতেই বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ মেচেদা আরপিএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আক্রান্ত জওয়ানের দেহে করোনার কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। আমরা ওঁকে আলাদা একটি ঘরেই নিভৃতবাসে রেখেছিলাম। পরীক্ষা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় আমরা ওঁকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।’’
‘রেড জোন’ থেকে ‘অরেঞ্জ জোনে’র দিকে এগোচ্ছিল পূর্ব মেদিনীপুর। এর মধ্যে জেলায় কর্মরত ব্যক্তির করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় চিন্তা বেড়েছে। অন্য দিকে, আরপিএফ সূত্রের খবর, খড়্গপুরে যে ১৮ জন নিভৃত বাসে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছ’জনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। ভিন্ রাজ্য থেকে খড়্গপুরে ১৪ এপ্রিল ফিরে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই জওয়ানরা কীভাবে কাজ করলেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের থেকে আর কারও মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়েছে কি না, সে নিয়েও দুশ্চিন্তা বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়ণের বক্তব্য, “আমরা সতর্কভাবে নজর রাখছি। দিল্লি ফেরত কর্মীদের পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা কর্মীদের খোঁজ চলছে। পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা প্রায় ১৩-১৪ জনকে ইতিমধ্যেই নিউ সেটলমেন্ট কোয়রান্টিন কেন্দ্র-সহ কয়েকটি জায়গায় কোয়রান্টিন করা হয়েছে।”