প্রতীকী ছবি
উর্দির ‘অপব্যবহার’ করে লকডাউন বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠল এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। তবে সোমবার সকালে রেলশহরের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মী দাবি করলেন, একমাস দশদিন বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাঁর স্ত্রীয়ের কাছে সংসার চালানোর টাকা নেই। তাই বাধ্য হয়ে বিধি ভাঙতে হয়েছে তাঁকে।
খড়্গপুর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবীরকুমার দেব হাওড়ার বালিতে ট্র্যাফিক গার্ডের কনস্টেবল। এ দিন ভোরে পুলিশের উর্দি পড়েই খড়্গপুরে বাড়িতে ফেরেন তিনি। এমন ঘটনা জানতে পেরেই সরব হয় এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, হাওড়া এই মুহূর্তে করোনার ‘হটস্পট’। অথচ সেই এলাকা থেকে লকডাউন ভেঙে পুলিশের উর্দির অপব্যবহার করে শহরের ওই এলাকায় এসেছেন তিনি। ওই পুলিশকর্মীর কোনও পরীক্ষা হয়নি বলে দাবি। স্থানীয়রা বাড়ি ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সাদাতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে পুলিশকর্মীর শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ওই পুলিশকর্মীর পড়শি সুদীপ সরকার বলেন, “এটা উর্দির অপব্যবহার। তাছাড়া এখন তো উপসর্গ ছাড়াও করোনার সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। তাই শুধু শরীরের তাপমাত্রা মেপে কী বোঝা যাবে?” প্রবীরের অবশ্য দাবি, পরিবারের হাতে সংসার চালানোর মতো টাকা নেই। বাড়িতে স্ত্রী-সহ দু’জন শিশু রয়েছে। তারা কীভাবে খাবে? তাই বাধ্য হয়ে তিনি উর্দি পড়ে বালি থেকে খড়্গপুরে এসেছেন বলে দাবি করেছেন প্রবীর। কিন্তু কর্তব্যরত অবস্থা ছাড়া এ ভাবে কি উর্দির ব্যবহার করা যায়? প্রবীর বলেন, “আমি জানি এটা উচিত হয়নি। কিন্তু বাড়িতে টাকা না দিলে খেতে পাবে না। পাড়ার কেউ ওঁদের সাহায্য করবেন না। আমি রবিবার রাত পর্যন্ত ডিউটি করেছি। একদিন ছুটি। তাই উর্দি পড়ে গাড়িতে করে বাড়িতে টাকা দিতে একদিনের জন্য এসেছি।” বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”
এক চিকিৎসককে নিয়েও উত্তেজনা ছড়িয়েছে সবংয়ে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা এক চিকিৎসক রবিবার সেখানকার একটি নার্সিংহোমে করোনা আক্রান্ত এক রোগীকে দেখেছিলেন। ওই রাতেই সবংয়ের মোহাড়ের শ্বেতচকে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা স্বাস্থ্য দফতর তমলুকের ওই নার্সিংহোম বন্ধ করে ওই চিকিৎসকের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই তিনি শ্বশুরবাড়িতে আসায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক তমলুকের ওই নার্সিংহোম ছাড়াও ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি ও সবংয়ের একটি ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত। সোমবার ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ওই চিকিৎসক ও তিনি যে রোগীদের দেখেছিলেন তাঁদের গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে।
সবংয়ের বিডিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই চিকিৎসক যেহেতু চলেই এসেছেন তাই হোম কোয়রান্টিন করা হয়েছে। এছাড়াও ১৯এপ্রিল তিনি সবংয়ে যে ৩২জন রোগীকে উনি দেখেছিলেন তাঁদেরও হোম কোয়রান্টিন করা হয়েছে।”