ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগে সংক্রমিত হয়েছিলেন এক ছাত্র। এ বার খড়্গপুর আইআইটিতে আরও তিনজন করোনা আক্রান্ত হলেন। এঁদের মধ্যে দু’জন পড়ুয়া ও তৃতীয় জন প্রতিষ্ঠানের বিসি রায় হাসপাতালের এক স্বাস্থ্য সহায়ক। আরটিপিসিআর পরীক্ষায় এঁদের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে রবিবার রাতে। তিন জনকেই বি সি রায় হাসপাতালে বর্তি করানো হয়েছে।
আনলক-পর্বে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন খড়্গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তার পরেও হল (হস্টেল) ছাড়েনি একাংশ পড়ুয়া। এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে ঢোকা-বেরনোয় নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। তাতেও অবশ্য করোনা ঠেকানো যায়নি। ক’দিন আগে এক বিটেক ছাত্রের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর দ্রুত হস্টেল খালির নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। খড়্গপুর আইআইটির রেজিষ্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা একযোগে আক্রান্ত হয়েছেন এটা নিশ্চিত। কী ভাবে প্রতিষ্ঠান চত্বরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না।”
গত বুধবার করোনা আক্রান্ত বিটেক অন্তিমবর্ষের ছাত্রটি যে হলে থাকতেন, সেই লালবাহাদুর শাস্ত্রী হলের আবাসিক দুই পড়ুয়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের একজন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের বিটেক ছাত্র, অন্যজন ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অন্তিমবর্ষের ছাত্র। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রটির কথায়, “আমাদের কোনও উপসর্গ নেই। প্রথম যে আক্রান্ত হয়েছিল তার সঙ্গে একই হলে একই তলায় ছিলাম। সেখানেই শৌচাগার বা মেসে খাওয়াদাওয়া থেকে হয়তো সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’’ বিসি রায় হাসপাতালের যে স্বাস্থ্যকর্মী পজ়িটিভ হয়েছেন, তিনিও প্রথম আক্রান্ত ছাত্রটিকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে ওই স্বাস্থ্যকর্মী নিজেও দিন পাঁচেক আগে বিষ্ণুপুরে নিজের বাড়ি থেকে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন। সেখান থেকেও তিনি সংক্রমিত হতে পারেন।
রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথও বলছিলেন, “আমাদের নিরাপত্তা যথেষ্ট। কিন্তু কখনও হয়তো নিরাপত্তার ফাঁক গলে মিথ্যা কথা বলে পড়ুয়ারা বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময়ে অনলাইনে খাবার অর্ডার করে গেট থেকে নিয়ে আসছে। কিন্তু এ সব তো স্পষ্ট নয়।’’ ক্যাম্পাস করোনামুক্ত রাখতে আনলক-পর্বের শুরুতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পড়ুয়াদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ১২ হাজার পড়ুয়ার মধ্যে থেকে গিয়েছিলেন প্রায় তিনশো পড়ুয়া। দিন কয়েক আগে এক ছাত্র করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে কয়েকজনকে শ্যাম হলে পর্যবেক্ষণে রেখে চারটি হলে থাকা বাকি পড়ুয়াদের হল ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি দেন কর্তৃপক্ষ। অবশ্য ট্রেন, বিমানের টিকিট না পাওয়া, বাড়িতে বৃদ্ধরা থাকার কারণ দেখিয়ে প্রায় দু’শো পড়ুয়া থেকেই গিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার বলেন, “কাউকে তো জোর করে তাড়াতে পারি না। ধীরে ধীরে হল খালির চেষ্টা চালাচ্ছি।”
সংক্রমণ থেমে নেই খড়্গপুর শহরেও। রবিবার রাতে আসা রিপোর্টে আইআইটি-র তিন জন সমেত শহরের ৩০ জন পজ়িটিভ হয়েছেন। সোমবার শহরে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় আবার এক প্রসূতি-সহ দু’জন পজ়িটিভ হয়েছেন। ফলে, সাময়িকভাবে মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে।