প্রতীকী ছবি।
সংক্রমিতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুসারে, জেলায় মৃতের সংখ্যা ৫০ ছুঁইছে বুধবারই। তাতে আম জনতার হুঁশ না ফিরলেও, নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য সরকারের নির্দেশে বুধবার থেকেই জেলাই আশাকর্মীদের দিয়ে কোমর্বিডিটি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যে ৫০ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ২৪ জন পূ্র্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার অন্তর্গত। বাকিরা হয় নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা বা জেলার ঠিকানাধারী বাইরের বাসিন্দা। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানাচ্ছেন, পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশ কোমর্বিডিটি সমস্যাও ছিল। এবং মৃতদের বেশির ভাগরই বয়স ৬০ এর উপরে। কিছু জন ছিলেন ৫০ থেকে ৬০ বছরের কোঠায়।
নিতাই বলছেন, ‘‘কোনও ব্যক্তির কোমর্বিডিটি সংক্রান্ত তথ্য পেতে বুধবার থেকেই আশা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাইবেন, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, সুগার, হাঁফানি, ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্তে কি না।’’ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে গোটা জেলার ওই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তিন কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। তাঁদের হোম আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। অবশ্য, গত কয়েকদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অগস্ট মাসের প্রথম দিক থেকে জেলায় গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ জনের কাছাকাছি করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসছিল। গত তিনদিন তা কমেছে। সোমবার ১৩৪, মঙ্গলবার ১১৪ এবং বুধবার ১৬৯ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে।
করোনায় আক্রান্তের হার কমলেও নিম্নচাপের স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় জ্বর-সর্দিতে অসুস্থের সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি করছেন জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক-কর্মীরা। আক্রান্তেরা জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে ভিড় করছেন।
এ দিকে, করোনায় মৃত্যু যখন ৫০ হয়েছে, তখন বৃহস্পতিবার লকডাউনের দিনেও তমলুক শহরের রাস্তাঘাটে দাপিয়ে বেড়িয়েছে গাড়ি-টোটো-মোটরবাইক। বড় বাজার, নন্দকুমার ব্লকের কোলসর, নন্দকুমার-সহ বিভিন্ন বাজারে পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। পুলিশের টহলদারি শুরু হতেই ব্যবসীয়ারা দোকানপাট বন্ধ করে পালিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, তমলুক, মেচেদা, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর সহ বিভিন্ন বাজার এলাকায় টহলদারি চালানো হয়। রাজ্য ও জাতীয় সড়কে অভিযান হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)