Contai Murder

থমথমে স্কুল চত্বর, ভয়ে মা-হারা মেয়ে

শুক্রবার কাঁথি হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় এবং মহকুমাশাসকের বাংলোর সামনে বর্ণালী রায় (৩৭) নামে এক মহিলাকে কুপিয়ে খুন করে তাঁরই পুলিশ কর্মী স্বামী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৩৯
Share:

এক দিন আগেই স্কুলের সামনে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এক মহিলাকে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে শনিবার কাঁথির হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা ছিল থমথমে। আর স্কুলের উল্টো দিকে মহকুমাশাসকের অফিসের যে এলাকায় অভিভাবকদের একটা অংশ গল্প করতেন, শুক্রবারের ঘটনার পরে সেই বাংলোর সামনে দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নিহত মহিলারনাবালিকা কন্যাও।

Advertisement

শুক্রবার কাঁথি হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় এবং মহকুমাশাসকের বাংলোর সামনে বর্ণালী রায় (৩৭) নামে এক মহিলাকে কুপিয়ে খুন করে তাঁরই পুলিশ কর্মী স্বামী। এ দিন সকালে কাঁথি হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা ছিল। পঠনপাঠন চলেছ অন্য ক্লাসেরও। তবে, এদিন ছাত্রীদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। অভিভাবকেরা সকলেই পড়ুয়াদের স্কুলের ভিতরে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি যান। আর ক্লাস শুরু হতেই স্কুলের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে মেয়েদেরকে হাত ধরে বাড়ি নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে অভিভাবকদের। এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘এই খুনের পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই মেয়েকে হাত ধরেই বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’’ যদিও প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা শাসমল বলছেন, ‘‘স্কুল খোলা রেখে ক্লাস তো চালিয়ে যেতেই হবে। আমরা স্কুলের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রাখি। স্কুল চালু হওয়ার সময় কয়েকজন সিভিক ভলেন্টিয়ার ছিলেন।’’

এদিন অবশ্য পরীক্ষা দিতে আসেনি নিহত বর্ণালীর মেয়ে। সে কাঁথি হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বর্ণালীর মেয়ে এ দিন মামার বাড়িতে ছিল। শুক্রবার দুপুর থেকে ওই বাড়িতেও হাঁড়ি চড়েনি। দাদু এবং দিদার সঙ্গেই ঘর রয়েছেন বর্ণালীর মেয়ে। তার দাবি, ‘‘একেবারে ছোটবেলা থেকে মা কষ্টে আমাকে বড় করছিল। সেই মা খুন হয়ে গিয়েছে। আমার কী হবে! বাবা ছাড়া পাওয়ার পর আমাকেও হয়তো মেরে ফেলবে।’’ বর্ণালীর বাবা সুশান্ত দাস বলছেন, ‘‘জামাই প্রতি মুহূর্তে ওকে সন্দেহ করত। মেয়ের প্রাণ কেড়ে নিল। ওর যেন ফাঁসির সাজা হয়।’’

Advertisement

শুক্রবার রাতেই বর্ণালীর স্বামী বাপ্পাদিত্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের দাদা শান্তনু দাস। এ দিন তাকে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তার পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। নিহতের মেয়েকে ভয় না পাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘দাম্পত্য কলহের কারণে খুন করা হয়েছে বলে ধৃত প্রাথমিক জিজ্ঞাসা আমাদের জানিয়েছে। নিহতের বাবার বাড়ি এবং তার মেয়ের সুরক্ষার বিষয়টিও আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। কাঁথির জনবহুল এলাকাগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement