মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখার দাবিতে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। বুধবার কাঁথি -১ ব্লকের মাজিলাপুর পঞ্চায়েতে। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানোর চেষ্টা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। সেখান থেকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তুমুল গোলমাল।
এই ঘটনার জেরে বুধবার সকালে কাঁথি-১ ব্লকের মাজিলাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির এক পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। যদিও মারের কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তবে দিলীপ ভুঁইয়া নামে ওই বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যকে স্থানীয় হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য আমিন সোহেলের অভিযোগ, "পঞ্চায়েত কার্যালয়কে বিজেপি নিজেদের বলে দাবি করছে। সরকারি কার্যালয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাত্মা গান্ধী এবং অম্বেডকরের ছবি ছিল না। তাই তাঁদের ছবি লাগানোর জন্য আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি।"
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সাল থেকে দীর্ঘ এক দশক ধরে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। কিন্তু ২১ আসন বিশিষ্ট সংশ্লিষ্ট গ্রাম- পঞ্চায়েতে এ বার ১১টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছে ন’টি আর একটিতে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী। বিজেপি মনোনীত প্রদীপ কুণ্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন। তাতে এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি রেষারেষি আরও তীব্র হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী, মহাত্মা গান্ধী এবং অম্বেডকরের ছবি নিয়ে মিছিল করে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের ভিতরে লাগাতে যান তৃণমূলের কর্মীরা। সেখানে তাঁরা জোর করে ছবি লাগানোর চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে গোলমাল বাধে।
বিজেপি পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদীপ কুমার কুণ্ডু বলছেন, "কাউকে না জানিয়েই পঞ্চায়েত অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিল তৃণমূল। সেখানে সচিব আর এক্সিকিউটিভ আধিকারিকের ঘরে ঢুকে আমাদের উদ্দেশ্যে কটূ কথা বলা হয়েছে। এক পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূল মেরেছে।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, "রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত কিংবা পৌরসভাগুলিতে যেখানে শাসক দল ক্ষমতায় রয়েছে সেখানে কোথাও দেশের রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকে না। আগে ওরা দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের ছবি লাগাক।"
প্রসঙ্গত, পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির অফিস গুলিতে কাদের ছবি লাগানো হবে আর কাদের ছবি থাকবে না সে বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা নেই।
এ দিনের অশান্তি প্রসঙ্গে কাঁথি -১ বিডিও তুহিন কান্তি ঘোষ বলছেন,"সরকারি অফিসে ছবি লাগানো নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম নেই। মাজিলাপুরে কিছু অশান্তি হয়েছে। আগামী দিনে যাতে সব কিছু ঠিকঠাক চলে তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।"