(বাঁদিকে) মেরিন ড্রাইভে পলাশ গাছের উপরে দোকানের ছাউনি । গাছের উপরে কংক্রিটের ঢালাই (ডান দিকে)। দুর্গাচকে। —নিজস্ব চিত্র।
শিল্পশহর হলদিয়ায় গাছ ধ্বংসের অভিযোগ বারবার উঠে আসে। এবার শহরের মেরিন ড্রাইভ এলাকায় পলাশ গাছ নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকায় একাধিক সংগঠন নানা সময়ে বহু গাছের চারা লাগিয়েছে। অভিযোগ, সেই গাছের অধিকাংশ নষ্ট করা হয়েছে বা গাছ উপড়ে সেখানে বসানো হয়েছে দোকান। এ নিয়ে মঙ্গলবার একটি অভিযোগ জমা পড়েছে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে।
এ দিন মেরিন ড্রাইভ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, একাধিক পলাশ গাছের উপরে ছাউনি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় গাছের শেকড়ের জায়গায় ফেলা হয়েছে ইট, পাথর। পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ, এভাবেই গাছ মেরে ফেলা হয়। পরে ওই জায়গায় সম্প্রসারিত করা হবে দোকান। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সুতাহাটা বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক মনীন্দ্রনাথ গায়েন বলছেন, ‘‘হলদিয়ায় গাছ মেরে ফেলা দীর্ঘদিনের অভ্যাস। নদীর তীরে যেভাবে পলাশ গাছগুলোকে নষ্ট করা হচ্ছে তা অকল্পনীয়।’’ শুধু তাই নয় সেন্ট্রাল স্ট্যান্ডের সামনে বিশ্বকর্মা পূজাকে কেন্দ্র করে বসেছে একাধিক অস্থায়ী দোকান। এই দোকানগুলি গাছের চারা নষ্ট করছে বলে পরিবেশ কর্মীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে, হলদিয়া পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের পক্ষে মানিক ভূঁইয়া, সুপ্রিয় মান্না ও শামীম আলি নামে একধাকি পরিবেশ প্রেমী বন দফতরের নন্দকুমার রেঞ্জের আধিকারিক দীপক মণ্ডল এবং হলদিয়া পুুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক তাপস মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, হলদিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে গাছ থাকা সত্ত্বেও কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নন্দকুমারের রেঞ্জার দীপক মণ্ডল বলেন, ‘‘পলাশ গাছ নষ্টের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, শিল্পশহর হলদিয়ায় আমপান ঝড়ের সময় প্রচুর গাছ নষ্ট হয়। তার বিকল্প হিসাবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চাঁদা তুলে চারাগাছ লাগাচ্ছে হলদিয়ায়। তাদের দাবি, প্রশাসন নিজে গাছ লাগাচ্ছে না। এ দিকে, তারা কষ্ট করে গাছ লাগালে সেই গাছ নষ্ট করা হচ্ছে। প্রশাসন পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না। মেরিন ড্রাইভের মতো জনবহুল এলাকায় নিয়মিত পুরসভা সাফাই অভিযান চালায়। সেখানে তা হলে কীভাবে পলাশ গাছ নষ্টের বিষয়টি তাদের নজরে আসছে না? হলদিয়া পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক তাপস মুখোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’