হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুপ্রিয়া। নিজস্ব চিত্র
উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তারের নীচে বাড়ির তৈরির কাজের সময় দিন কয়েক আগে তমলুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই দিঘায় বিদ্যুতের খোলা কেবল লাইনে পা লেগে জখম হলেন এক শিশু। তমলুকের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। দিঘায় জখম শিশুর দু’টি পা-ই ঝলসে গিয়েছে। বর্তমানে সে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সৈকত শহর দিঘায় বিদ্যুৎ পরিষেবার খোলনলচে বদলে ফেলা হচ্ছে। খুঁটিতে টানা তারের বদলে মাটির তলা দিয়ে পাতা হচ্ছে কেবল লাইন। সমুদ্র উপকূল এলাকায় ঝড় হলেই তার ছিঁড়ে যায় হামেশাই। ওই সমস্যা এড়াতে গত জুন-জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল কেবল লাইন পাতার কাজ। মঙ্গলবার সেই কেবলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় রামনগর-১ ব্লকের বিলাআমড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বছর নয়ের সুপ্রিয়া ভঞ্জ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নিউ দিঘায় বাইপাস সংলগ্ন বিলাআমড়িয়া গ্রামে নিজের বাড়ির সামনে খেলছিল সুপ্রিয়া। সে সময় বিদ্যুতের খোলা লাইনে তার পা জড়িয়ে যায়। দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকেরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে তার দুটি পা মারাত্মকভাবে ঝলসে যায়। ওই কিশোরীর বাবার অভিযোগ, দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় বিদ্যুতের তার এ রকম খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কোনও রকম সতর্কীকরণ বোর্ড পর্যন্ত লাগানো নেই। এর ফলে এ দিন তাঁর মেয়েকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হল। এর পরেই বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকা শ্রমিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য চম্পাবতী জানা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে কেবল লাইনের মুখ বিভিন্ন জায়গায় খোলা অবস্থায় রয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিকবার বিদ্যুৎ দফতরের লোকেদের জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও রকম গুরুত্ব দেয়নি।’’
প্রসঙ্গত, দিঘায় মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালুর কাজের দায়িত্বে রয়েছে ‘লারসেন অ্যান্ড টু ব্রো’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। ওল্ড ও নিউ দিঘার অধিকাংশ এলাকা জুড়ে মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুতের কেবল লাইন পাতার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় সর্বত্র কেবল লাইনের মুখ আলগা রয়েছে। কোথাও কোথাও মাথার উপর থেকে বিদ্যুতের লাইন ঝুলে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কৌস্তব সাহা বলেন, ‘‘এদিন বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে কেবল লাইনের পরীক্ষানিরীক্ষা চলছিল। ওই তারে কীভাবে বিদ্যুৎ গিয়ে পৌঁছল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ যদিও পরীক্ষামূলক ভাবে কেবল লাইনের বিদ্যুৎ পরিষেবা যাচাই করে দেখার সময় কেন তারগুলি উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।