প্রতীকী ছবি।
নিখোঁজ এক যুবকের গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল নন্দকুমারের মাধবপুর এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে মাধবপুরের পাশে কল্যানপুর গ্রামে পুকুরে ওই যুবকের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন বাসিন্দারা। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতাল পাঠায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তপন বেরা (২৭)। ওই যুবক নন্দকুমার বাজারে গ্রিলের দোকানে কাজ করতেন। যুবকের পরিবারের দাবি, তপন বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক আক্রোশে তপনকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। তপনের বাবা নন্দকুমার থানার পুলিশের কাছে ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছেন। তবে সেখানে কোনও অভিযুক্তর নাম নেই। বিজেপি জেলা নেতৃত্বের তরফে তপনকে তাদের কর্মী দাবি করে এই ঘটনায় তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিজেপির তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে।
বাড়িতে বাবা- মা, স্ত্রী এবং ৯ বছরের মেয়ে ও তিন বছরের ছেলে রয়েছে তপনের। এলাকায় বিজেপির বুথকর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তপনের বাবা শ্রীকান্ত বেরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিল। সোমবার রাত ৮টা নাগাদ মাধবপুর গ্রামের দাসসুড়ায় একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় ছেলেকে কেউ ফোন করে ডাকে। তপন তাঁকে জানায় আধ ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে আসছে। তিনি ছেলেকে তাড়াতাড়ি ফিরতে বলে বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু রাতে তপন আর বাড়ি না ফেরায় সবাই খোঁজ শুরু করেন। শ্রীকান্তের অভিযোগ, রাতে ছেলকে বাড়ি া ফেরায় তিনি তাঁর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে মোবাইল সুইচ অফ বলে জানা যায়। এ দিন ভোরে পাশের কল্যাণপুর গ্রামের একটি পুকুরে ছেলের দেহ ভেসে থাকার খবর পান তাঁরা তে দেখা যায়। মৃতদেহ তুলে দেখা যায় গলায় ধারাল কিছু দিয়ে একাধিক জায়গায় কাটা রয়েছে। বিজেপি করার অপরাধেই তপনকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বলে
শ্রীকান্তর অভিযোগ।
তপনের স্ত্রী মাধবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী বিজেপি করত। যারা ওকে খুন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘তপন বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের সময় দলের হয়ে প্রচার করেন। তখন থেকেই তপনের উপর তৃণমূলের আক্রোশ ছিল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তপনকে খুন করেছে তৃণমূলের লোকজন।’’ বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা তথা নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে বলেন, ‘‘ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজনৈতিক কোনও বিষয় আছে বলে আমাদের জানা নেই। পুলিশ তদন্ত করছে। তা ছাড়া যুবকের পরিবার আমাদের দলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি। বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের দলের নাম জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই যুবককে খুনের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান যুবকের গলা ধারালো কিছু দিয়ে কাটা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহ ময়নাতদন্তে
পাঠানো হয়েছে।