West Bengal Assembly Election 2021

ভোটোত্তর সন্ত্রাস, ঘুরছে কেন্দ্রীয় দল

ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার। অথচ অভিযোগ জানানোর পরেও স্থানীয় প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২১ ০৬:০১
Share:

নারায়ণগড়ে কেন্দ্রীয় দল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

কথা মতোই পরিদর্শনে এল জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশনের প্রতিনিধি দল। সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের একাধিক জায়গায় যান দলের সদস্যরা। দলে ছিলেন জনজাতি কমিশনের সদস্য অনন্ত নায়েক, কমিশনের অধিকর্তা ললিতলতা, সহ অধিকর্তা (ভুবনেশ্বর রিজিয়ন) অশোক বর্ধন প্রমুখ।

Advertisement

ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার। অথচ অভিযোগ জানানোর পরেও স্থানীয় প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আদিবাসী, জনজাতি সম্প্রদায়ের যে সব মানুষজন এমন অভিযোগ তুলেছেন, কেন্দ্রীয় দলটি তাঁদের কাছেই গিয়েছে। অভিযোগকারীরা মূলত বিজেপির কর্মী-সমর্থক। এ দিন নারায়ণগড়ের দু’টি জায়গায় যায় প্রতিনিধি দলটি। গ্রামরাজ পঞ্চায়েতের বিরবিরার দীনেশ সিংহ ও নারমা পঞ্চায়েতের মদনমোহন চকের চৈতন্য হাঁসদার বাড়িতে গিয়ে কথা বলে। কথা বলে গ্রামবাসীদের সঙ্গেও। গিয়েছিলেন নারায়ণগড়ের বিডিও রেণুকা খাতুন, খড়্গপুরের এসডিপিও দীপক সরকার। চৈতন্যর অভিযোগ, তাঁকে গত ২৬ মে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে। স্থানীয়ভাবে মিটমাট না হওয়ায় তিনি লিখিত অভিযোগ করেন পুলিশে। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি। জনজাতি কমিশনের সদস্য, ওড়িশার কেওনঝড়ের বিজেপি সাংসদ অনন্ত নায়েক বলেন, "যে অভিযোগগুলো কমিশন পেয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখতে আমরা ঘুরছি। কমিশনকে রিপোর্ট জানানো হবে।’’

দিন দু’য়েক আগেই ঘরে ফিরেছেন খড়্গপুর গ্রামীণের জকপুর সংলগ্ন রাধানগর গ্রামের জনা পঁয়ত্রিশ যুবক। পিংলা বিধানসভার অন্তর্গত এই এলাকায় ভোটের পর থেকেই তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। রাধানগরের এই তফসিলি জনজাতিরাও আক্রান্ত বলে বিজেপির দাবি। তার জেরেই ঘরছাড়া হন প্রায় ৩০টি পরিবারের ৩৫জন। হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁরা ঘরে ফিরেছেন। এ দিন তাঁদের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রীয় দল। ছিলেন বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। এলাকায় যান খড়্গপুরের এসডিপিও দীপক সরকার। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় দলের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালের জন্য আমরা গিয়েছিলাম। ওঁরা গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন।” রাধানগরে ভীম সিংহ, নিয়তি সিংহ, গোড়া সিংহ-সহ বেশ কয়েকজনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। ভীমের অভিযোগ, “হাইকোর্টের নির্দেশে ফিরলেও অত্যাচার চলছেই। আমাদের আদিবাসী পরিবারের মানুষকে কটূক্তি, গালিগালাজ করা হচ্ছে। আমরা কেন্দ্রীয় কমিশনের প্রতিনিধিদের সব জানিয়েছি। ওঁরা সুরাহার আশ্বাস দিয়েছেন।”

Advertisement

ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঝাড়গ্রাম জেলাতেও যায় কেন্দ্রীয় দলটি। জামবনির ভাদুয়া গ্রামে গিয়ে ‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে’ নিহত বিজেপির কিসান মোর্চার নেতা কিশোর মান্ডির স্ত্রী ও পরিজনদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন প্রতিনিধিরা। সঙ্গে ছিলেন জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ আধিকারিক পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়, জামবনির বিডিও সৈকত দে। গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমও। গত ৫ মে সন্ধ্যায় জামবনির খাটখুরা এলাকার মহুয়াচকে আক্রান্ত হন কিশোর। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটিতে নিয়ে যাওয়া হলে কিছুক্ষণ পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, কিশোর খুনে জড়িত সন্দেহে সম্প্রতি একজনকে ধরা হয়। অভিযুক্ত জেল হেফাজতে রয়েছে। তবে এফআইআরে কারও নাম নেই। সাংসদ কুনার বলেন, ‘‘পরিবারটি জঙ্গল এলাকায় থাকে। তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এ দিন কমিশনের সদস্যরা সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement