Borewell

কুয়োয় শিবু, বাঁচাতে পারল না দমকলও

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে বিরিহাঁড়ি গ্রামের শিবমন্দিরে ষাঁড়টিকে দেবতাকে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০০:৩২
Share:

—ফাইল চিত্র।

গৃহস্থের বাড়ির আনাজের খোসা, ভাতের ফ্যান, কলাটা-মূলোটায় দিব্যি চলে যেত শিবপ্রসাদ ওরফে শিবুর। কিন্তু বয়সটাও তো কম হয়নি। বাঁ চোখে দেখতেও পেত না সে। তাই রাতের অন্ধকারে চলতে গিয়ে পা হড়কে পাতকুয়োয় পড়ে গিয়েছিল ঝাড়গ্রামের মধুপুর গ্রামের শিবপ্রসাদ। ধর্মের সেই ষাঁড়কে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন দমকল কর্মীরাও। কিন্তু সারা রাত জলে থাকা আর সকালে দড়ি বেঁধে টানা হ্যাঁচড়ার ধকল নিতে পারল না বুড়ো ষাঁড়টি। শুক্রবার সকালে দমকল কর্মীরা ষাঁড়টিকে পাতকুয়ো থেকে তোলার কিছুক্ষণ পরে মারা গেল সে। অবলা প্রাণিটির এমন মৃত্যুতে মন খারাপ মধুপুরের আমজনতার।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে বিরিহাঁড়ি গ্রামের শিবমন্দিরে ষাঁড়টিকে দেবতাকে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই নাম দেওয়া হয়েছিল শিবপ্রসাদ। গ্রামবাসী ডাকতেন ‘শিবু’ নামে। ষাঁড়টি এলাকায় ঘুরে বেড়াত। বছর দশেক ধরে আস্তানা ছিল মধুপুর গ্রাম। শুক্রবার ভোরে পাতকুয়োর ভিতর থেকে জলের শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মণিকা মাহাতোর। তাঁর বাড়ির উঠোনেই রয়েছে পাতকুয়ো। কুয়োর চারপাশের বেড়টা নীচু। মণিকা বলেন, ‘‘পাতকুয়োর ভিতর থেকে গোঙানির আওয়াজ আর জলের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি শিবু জলে পড়ে কাতরাচ্ছে।’’ খবর দেওয়া হয় ঝাড়গ্রাম দমকল কেন্দ্রে। সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ চলে আসেন দমকলকর্মীরা।

কিন্তু বিশাল বপুর ষাঁড়টির পায়ে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে তুলতে সমস্যা হয়। পাতকুয়োর জল বেশ তলায় ছিল। তাই দমকল কর্মীরা পাতকুয়োর অতিরিক্ত জল ভরেন। কুয়োর জল বাড়ায় শিবু অনেকটা উপরে ভেসে ওঠে। এরপরে পায়ে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ষাঁড়টিকে টেনে তোলা হয়। কিছুক্ষণ পরে ষাঁড়টি মারা যায়।

Advertisement

গ্রামের যুবক নির্মল মাহাতো, দীপক মাহাতো জানালেন, বয়সের ভারে শিবুর চলাফেরা করতে সমস্যা হতো। শিবু বাঁ চোখে দেখতে পেত না। গ্রামের বাসিন্দা উমারানি মাহাতো, কবিতা মাহাতো বলছেন, ‘‘শিবু কারও ক্ষতি করেনি। খিদে পেলে উঠোনে আসত।’’ ঝাড়গ্রাম দমকল কেন্দ্রের ওসি পুলক শর্মা বলেন, ‘‘গত এক বছরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাতকুয়োয় পড়ে যাওয়া ১৯৮টি গরু ও ছাগল আমরা উদ্ধার করেছি। তারা বেঁচেও গিয়েছে। মধুপুর গ্রামের ষাঁড়টিকে উদ্ধার করার পরে সেটি মারা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement