মোটর বাইক ছিল সর্ব ক্ষণের সঙ্গী। তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের দেহ উদ্ধারের আগে বাইকটি দেখতে পান স্থানীয়রা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবেশীর বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। বুধবার সকালে এ নিয়ে চাঞ্চল্য পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার চাঁপি গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম শেখ আহমেদ। স্থানীয় সূত্রে খবর, লাক্ষা-২ অঞ্চলের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন আহমেদ। তাঁর স্ত্রী-ও পঞ্চায়েতের সদস্যা ছিলেন। ঠিক কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু তা নিয়েই রহস্য দানা বেঁধেছে।
মহিষাদল থানার পুলিশ জানিয়েছে, দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি শেখ রবিকুল নামে মৃতের এক সঙ্গীকে আটক করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এবং কী ভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হল, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে বলে জানাচ্ছেন তদন্দকারীরা।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার সকালে চাঁপি মধ্যপল্লি এলাকায় একটি দোকানের কাছে আহমেদের মোটর বাইকটি দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। পরে সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে একটি বাড়ির পিছনে তাঁকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কয়েক জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, যুবকের মুখ থেকে গাঁজলা বার হচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। কিন্তু দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে তারা। পরে মহিষাদল থানা থেকে পুলিশের একটি দল গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয়।
বিজয়কুমার মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘যে বাড়ির পিছন থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে, সেখানে আমার বয়স্ক বাবা-মা থাকেন। বুধবার সকালে মা ও বাবা বাড়ির পিছনে ওই যুবককে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই।’’ তিনি আরও বলেন, “মৃতের মোটর বাইকটি আবার রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। বাইকে রক্তের সামান্য ছিটেও লেগে ছিল। কিন্তু বাইক থেকে কী ভাবে অতটা দূরে, আমাদের বাড়ির পিছনে ওই যুবক পৌঁছলেন, সেটাই বুঝতে পারছি না।”
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে, শেখ রবিবুল নামে স্থানীয় ক যুবকের সঙ্গে রাত ১২টা পর্যন্ত সময় কাটান আহমেদ। রবিকুল অবশ্য দাবি করেছেন, এই মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই। পুলিশ অবশ্য রবিবুলকে আটক করেছে। মৃতের স্ত্রী মনোয়ারা বিবি বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়েছিল ও। মহিষাদলে একটি দোকানে সোনার গয়না বন্ধক দেওয়া ছিল। সেটা ছাড়াতেই টাকা নিয়ে যায়।’’ তিনি জানান, রাত সাড়ে ১১টাতেও ফোনে কথা হয়েছে স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু তার পরে আর যোগাযোগ করতে পারেননি।
দেহ উদ্ধারের সময় আহমেদের পকেটে টাকা বা সোনার গয়না কিছুই ছিল না বলে খবর। মৃতের মুখে গাঁজলা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত নেশা করার কারণেও এমনটা হতে পারে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল তার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মহিষাদল থানার পুলিশ।