দেবের পদত্যাগের দাবিতে সরব বিজেপি। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতাদের ‘কাটমানি’ দিতে গিয়ে আবাস যোজনার বাড়িই তৈরি করা হয়নি তাঁর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ তুলেছেন কেশপুরের মহিষদার বাসিন্দা বিক্রম অধিকারী। ঘটনাচক্রে, যিনি সম্পর্কে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের তৃণমূল তারকা-সাংসদ দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেবের জেঠতুতো ভাই। এই নিয়ে সরগরম জেলার রাজনীতি। দাদা সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও যদি কাটমানি দিতে হয়, তা হলে সাধারণ মানুষের কী হবে, এই প্রশ্ন তুলে শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। দেবের পদত্যাগের দাবিতেও সরব তারা। পোস্টারও পড়েছে ঘাটাল শহর জুড়ে। বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও।
বিক্রমের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা এবং দেবকে বিঁধে বিজেপির পোস্টারে ছয়লাপ ঘাটাল। পোস্টার দেখা গিয়েছে পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড, ঘাটাল কলেজ, মহকুমাশাসকের দফতর, সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে। তাতে লেখা, ‘‘ঘরের ছেলে সাংসদ থাকা সত্ত্বেও বাড়ির টাকা নেওয়া হল কেন, দীপক অধিকারী জবাব দাও’’, ‘‘বিক্রম অধিকারীর আবাস যোজনার টাকা নেওয়া হল কেন, শিউলি সাহা জবাব দাও।’’ ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘‘সাংসদ দেবের ভাই স্বীকার করেছেন, আবাস যোজনার বাড়ি পেতে টাকা দিতে হয়। দেবের পরিবারের এক সদস্যই এ কথা বলছেন! তাই এই পোস্টার ফেলা হয়েছে। আমরা দেবের পদত্যাগ দাবি করছি।’’
পাল্টা জবাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বিজেপির মুশকিল হচ্ছে, কখন কী বলবে, বুঝতে পারছে না। দেব এদের কুৎসার জবাব দেয় না। তাই এরা আরও উঠে পড়ে লেগেছে! এ সব পোস্টার রাজনীতি করে কিছু হবে না। মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করতে হবে।’’
বিক্রম সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, ২০১৬ সালে তিনি আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েছিলেন। কিন্তু হাতে পাওয়া ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে ৬০ হাজার টাকাই তৃণমূল নেতাদের দিয়ে দিতে হয়েছে। যে কারণে বাড়ি তৈরি করতে পারেননি বিক্রম। তাঁর আরও দাবি, বছর দু’য়েক ধরে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। বিধায়ক শিউলিকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এ প্রসঙ্গে শিউলি বলেছেন, ‘‘আমার কাছে কেশপুরের বাকি সব মানুষের গুরুত্ব যতটা, ওঁর গুরুত্বও ঠিক ততটাই। দেবের ভাই বলে এতটুকু বেশি নয়। কেউ যদি ওঁর থেকে টাকা নিয়ে থাকে, তার নামে এফআইআর করেনি কেন?’’ বিক্রমের অভিযোগ প্রসঙ্গে কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁর নামে কয়েক বছর আগে বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল। বাড়ি তৈরি সংক্রান্ত সমস্যার কথা উনি জানাননি।’’