কালিয়াগঞ্জের তদন্তভার নিল সিআইডি। ফাইল চিত্র।
কালিয়াগঞ্জে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের (৩৩) খুনের অভিযোগের তদন্তভার নিল সিআইডি। পাশাপাশি, ঘটনার রাতে মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে পুলিশের উপরে হামলার পাল্টা অভিযোগেরও তদন্ত শুরু করেছে তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিআইডি রবিবার ওই দু’টি মামলার বিভিন্ন নথি পুলিশের থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সিআইডি অফিসারদের নিয়ে কলকাতার বিশেষজ্ঞ সিআইডি কর্তারা মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। পাশাপাশি, ওই যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত কালিয়াগঞ্জ থানার সহকারী সাব ইনস্পেক্টর মোয়াজ্জেম হোসেনকেও দু’টি মামলায় সিআইডি কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা। মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে চাঁদগাঁওয়ে অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এই মোয়াজ্জেমই।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার বলেন, “সিআইডি মৃত্যুঞ্জয়কে গুলি করে খুনের অভিযোগ ও একই রাতে মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।” যদিও সিআইডি তদন্তে খুশি নন মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন। মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমরা ছেলের মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।” মৃত্যুঞ্জয়ের দাদা মৃণালকান্তি বর্মণের আশঙ্কা, সিবিআই তদন্ত না-হলে তাঁর ভাইকে গুলি করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মী শাস্তি পাবেন না।
গত ২১ এপ্রিল জেলায় এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ২৫ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ থানায় স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন ‘রাজবংশী, তফসিলি ও আদিবাসী সংগঠনের সমন্বয় কমিটি’-র হাজার হাজার মানুষ। অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা থানায় ঢুকে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকে মারধর করেন।
২৬ এপ্রিল রাতে বিরাট পুলিশ বাহিনী কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সদস্য বিষ্ণু বর্মণকে গ্রেফতার করতে যায়। অভিযোগ, পুলিশ বিষ্ণুকে না পেয়ে তাঁর বাবা সবেন বর্মণকে গ্রেফতার করে। এর পরে পুলিশ বিষ্ণুর জামাই সাগর বর্মণকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করতেই পুলিশের সঙ্গে বিষ্ণুর পরিবারের গোলমাল বাধে। তখনই, পুলিশের গুলিতে বিষ্ণুর খুড়তুতো ভাই মৃত্যুঞ্জয় মারা যান বলে অভিযোগ।