অরুণের দাবি, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনেক অসঙ্গতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের নেতৃত্বেই খুন হয়েছেন বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া! ময়নার বিজেপি বুথ সভাপতি ‘খুনের’ ঘটনা খতিয়ে দেখতে এসে মন্তব্য করলেন জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান। বিজয়কৃষ্ণ খুনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার সকালে ময়না পৌঁছন জাতীয় এসসি কমিশনের আধিকারিকরা। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। এর পরই এমন মন্তব্য করেন জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। অরুণের দাবি, বিজয়কৃষ্ণের খুনের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারছে না। তদন্তেও সহযোগিতা করছে না। এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে হবে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবে কমিশন। ডিজি ও এসপিকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানোর কথা জানান তিনি।
তাঁর কথায়, “পুলিশের নেতৃত্বেই খুন হয়েছেন বিজয়কৃষ্ণ। তাই ডিজি, এসপিকে দিল্লি ডেকে পাঠাব। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এখানে একের পর এক খুন হচ্ছে। গোটা প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। এখানকার পুলিশ, জেলাশাসক কমিশনের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছে। বাংলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। এখানে আমরা ঘাঁটি গেড়ে থাকব।’’ যদিও জাতীয় এসসি কমিশনের এই মন্তব্যের পর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
ময়নার গোরামহল গ্রামের বাসিন্দা তফসিলি জাতিভুক্ত বিজয়কৃষ্ণকে নৃশংস ভাবে খুনের অভিযোগ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সদলবলে ময়নার বাকচায় হাজির হন অরুণ। তাঁর অভিযোগ, তিনি পৌঁছনোর পরও পুলিশের কোনও আধিকারিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেও ক্ষোভ উগরে দেন অরুণ।
বিজয়কৃষ্ণের দেহ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “গোটা ঘটনার প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে একাধিক প্রমাণ পড়ে থাকলেও তা সংরক্ষণের কোনও চেষ্টা পুলিশ করেনি। আমি সমস্ত রিপোর্ট নিয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হব।’’
অরুণের দাবি, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনেক অসঙ্গতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বিজয়কৃষ্ণের দেহ উদ্ধারের পর অনেক প্রয়োজনীয় তদন্ত প্রক্রিয়া মানা হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ। প্রয়োজনে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি করবেন বলেও জানিয়েছেন অরুণ।
অরুণ আরও যোগ করেছেন, “রাজ্যে ২২% তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। গোটা দেশে বসবাসকারী এমন তফসিলি মানুষদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই গঠন করা হয়েছে জাতীয় এসসি কমিশন। অথচ সেই কমিশনের গুরুত্বকে লঘু করার চেষ্টা করছে এ রাজ্যের পুলিশ।’’
অন্য দিকে বিজয়কৃষ্ণের ছেলে প্রসেনজিৎ ভুঁইয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তমলুক হাসপাতালের সামনে এসে অপেক্ষায় রয়েছি। এখনও দেহ কমান্ড হাসপাতালে পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা করছে না পুলিশ। বেলা ১০টা পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে পুলিশি তৎপরতা নজরে আসেনি। পুলিশের তরফে সকাল ৮টার দিকে ফোন করে আমাকে হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়। অথচ তার পর দেহ কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও ব্যবস্থাপনা দেখছি না।’’ বিজয়কৃষ্ণের দেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ার পর তা কলকাতায় পাঠানো হতে পারে বলেও আশঙ্কার প্রকাশ করেছেন প্রসেনজিৎ।