খুর্দা স্টেশনের কাছাকাছি ট্রেনেই পুত্র সন্তান প্রসব করেন পিঙ্কি। নিজস্ব চিত্র।
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পিঙ্কি কুমারীকে নিয়ে আপ পুরী-জয়নগর এক্সপ্রেসে কটক থেকে সমস্তিপুর যাচ্ছিলেন সুরজ কুমার। রাত আটটা নাগাদ খুর্দা স্টেশনের কাছাকাছি ট্রেনেই পুত্র সন্তান প্রসব করেন পিঙ্কি। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর যায়। প্রসূতি এবং নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিত করতে মেদিনীপুর স্টেশনে চিকিৎসক-সহ মেডিক্যাল টিম পৌঁছয়। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ট্রেন থেকে নামতে রাজি হননি সুরজ। বাধাও দেন। পরে যদিও পিঙ্কি ও তাঁর সন্তানকে ভর্তি করা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনে সন্তান প্রসব করেছেন এক যাত্রী এই খবর পেয়ে তাঁদের শুশ্রূষারর জন্য মেদিনীপুর স্টেশনে মেডিক্যাল টিম পৌঁছয়। ট্রেন থামার পর সদ্যোজাত-সহ তার মা ও বাবাকে নেমে আসার অনুরোধ করা হয়। কারণ, মা-ছেলের উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান চিকিৎসক। কিন্তু বাধ সাধেন সুরজ। কিছুতেই স্ত্রী-সন্তানকে ট্রেন থেকে নামতে দিতে রাজি হননি তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে বোঝানোর পর অবশেষে রাজি হন সুরজ। নবজাতক ও প্রসূতিকে নামিয়ে আনেন রেল কর্তৃপক্ষ। মা এবং শিশু দু’জনকেই মেদিনীপুর মেডিক্যল কলেজে ‘মাতৃমা’ বিভাগে ভর্তি করা হয় সাড়ে ১১টা নাগাদ।
স্টেশনে উপস্থিত চিকিৎসক টিকে ঘোড়ুই জানান, প্রসূতি ও তাঁর সদ্যোজাত ছেলে আপাতত ভাল রয়েছেন। তবে তাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি জানান। প্রায় এক ঘণ্টা আপ পুরী-জয়নগর এক্সপ্রেস মেদিনীপুরেই আটকে ছিল। দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন আটকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অন্য যাত্রীরা।
জানা গিয়েছে, সুরজ কটকে ফুচকা বিক্রি করতেন। তিন মাস পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমস্তিপুরে পৈতৃক বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। পিঙ্কি অন্তঃসত্ত্বা হলেও তাঁর প্রসবের দিন আরও পরে বলেই জানতেন সুরজ। ওই দম্পতি ছাড়াও পরিবারের আরও ২৫-২৬ জন সদস্য ছিলেন ট্রেনে।