বীরবাহা সরেন
তা হলে কি ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভানেত্রীর পদ থেকে সরতে হচ্ছে বিরবাহা সরেনকে! দলীয় বৈঠকে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন স্বয়ং তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।
বিরবাহাকে সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (ডিপিএসসি) চেয়ারম্যান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী বিরবাহাকে ওই পদ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। কিছুদিনের মধ্যেই ওই দায়িত্বভার নেবেন বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী। রবিবার ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের ব্লক সদর রোহিনীর একটি স্কুলে জেলা কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন শুভেন্দু। বৈঠকের শুরুতেই ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য বিরবাহাকে অভিনন্দন জানান শুভেন্দু। তৃণমূল সূত্রের খবর, এরপরই বৈঠকে শুভেন্দু ইঙ্গিত দেন, বিরবাহা ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক স্কুল সংসদের বিভাগীয় কাজে বেশি জড়িয়ে পড়তে হতে পারে। তাই দলের কাজের জন্য জেলা সভাপতি পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে কি-না, সে বিষয়ে দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।
রবিবার বৈঠকে থাকা জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘বিরবাহাকে সভাপতি পদ থেকে সরানো হবে বলে বৈঠকে কার্যত ইঙ্গিত দেন জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক।’’ এ প্রসঙ্গে বিরবাহা বলেন, ‘‘একই সঙ্গে দু’টি পদে থাকতে পারব কি-না এ বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন বলে পর্যবেক্ষক জানান। সরকারি নিয়মও খতিয়ে দেখে দল পদক্ষেপ করবে।’’
আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা বিরবাহাকে ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে দলীয় প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রমের কাছে ভোটে হারেন বিরবাহা। এরপরে বিরবাহাকে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেন নেত্রী। দলের শীর্ষ নেতৃত্বও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। তবে তৃণমূলের এক সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলে দলের পরিস্থিতি অনুকুলে নেই। এমন পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সাংগঠনিক কাজে অভিজ্ঞ কাউকে জেলা সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে।
তবে ভিন্ন মতও উঠে আসছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। দীর্ঘ কয়েক বছর পরে জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে ফিরেছেন শুভেন্দু। এখন প্রতিপক্ষ মুকুল রায় বিজেপিতে। মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও সাংসদ দোলা সেন মাঝে মধ্যে ঝাড়গ্রামে এলেও ওই গোষ্ঠীর বেশির ভাগ কর্মীদের নিজের পক্ষে আনতে সমর্থ হয়েছেন শুভেন্দু। ফলে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কোনও নেতা ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির দায়িত্বে এলে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে জানাচ্ছেন নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা।