—নিজস্ব চিত্র।
প্রবল বৃষ্টির জেরে গত কয়েক দিন ধরেই বাড়ির চারপাশ জলে ডুবে। তবে সেই জলযন্ত্রণার মাঝেই স্বপ্নপূরণের হাতছানি এসেছিল। জীবনের প্রথম সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসার ডাক পেয়েছিলেন তনুশ্রী মহাপাত্র। কিন্তু, আশপাশের জল পেরিয়ে পরীক্ষা দিতে যাবেন কী ভাবে? অবশেষে দুশ্চিন্তা কাটিয়ে খড়ের ভেলা তৈরি করে তাতে চেপেই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছলেন ভগবানপুরের তনুশ্রী।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা, পটাশপুর, চণ্ডীপুর এবং ভগবানপুর বিধানসভার বিস্তীর্ণ এলাকা গত কয়েক দিন ধরেই কেলেঘাই নদীর জলে ডুবে রয়েছে। একাধিক জায়গার একতলা বাড়ি জলের তলায়। ত্রাণ থেকে পানীয় জলের জন্য হাহাকার সর্বত্র। এরই মাঝে ভগবানপুরের জলিবাড় গ্রামের বাসিন্দা তনুশ্রীর কাছে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসার সুযোগ আসে। তবে তাঁর স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জলযন্ত্রণা। কী ভাবে সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে? একরাশ দুশ্চিন্তা চেপে বসেছিল তনুশ্রীর মনে। অগত্যা বাড়িতে মজুত খড়ের বোঝা পলিথিন দিয়ে বেঁধে একটি অস্থায়ী নৌকো বানিয়ে ফেলেন তিনি। পরীক্ষার দিন মেয়েকে সেই ভেলায় চাপিয়ে এক কোমর জল ছাপিয়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু রাস্তায় নিয়ে যান তাঁর মা।
তনুশ্রী বলেন, ‘‘বাঁধ ছাপিয়ে কেলেঘাই নদীর জলে পটাশপুর, এগরার পর ভগবানপুরেও ঢুকেছে। এই জায়গাগুলিতে সে ভাবে বন্যা না হওয়ায় নৌকোর কোনও সংস্থান নেই। গত কয়েক দিন বাড়ির চার দিকেই শুধু থইথই জল। এরই মাঝে জীবনের প্রথম বড় মাপের সরকারি চাকরির পরীক্ষার ডাক এসেছিল। পুলিশের চাকরির পরীক্ষায় বসার জন্য তাই খড়ের ভেলা বানিয়ে তাতেই চেপে বসি। জামাকাপড় যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, তাই ভেলা ঠেলে অনেকটা পথ নিয়ে এসেছে মা।’’