দিঘায় চলছে পর্যটকদের করোনা পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় হোটেল ব্যাবসায়ীদের দাবি মেনে দিঘায় আবাব পর্যটকদের কোভিড পরীক্ষার কাজ শুরু হল। বুধবার ওল্ড দিঘায় অবস্থিত দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের অফিসেই পর্যটকদের ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট’ শুরু হয়েছে। এর ফলে শীঘ্রই দিঘায় পর্যটকদের যাতায়াতে জটিলতা কেটে যাবে বলে মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
গত ১২ জুলাই কাঁথির মহকুমা প্রশাসনের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়, দু’টি করোনা টিকা নেওয়ার শংসাপত্র কিংবা র্যাপিড বা আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া পর্যটকরা দিঘায় আসতে পারবেন না। এর পরেই পর্যটকদের জন্য ১৪ জুলাই তড়িঘড়ি হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে দিঘায় র্যাপিড পরীক্ষা শুরু করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তার পর আর কোভিড পরীক্ষা শিবির করা যায়নি। ফলে দ্রুত দিঘা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকেন পর্যটকরা।
জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, এত বিপুল পর্যটকের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার মতো কিটের জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া কোনও পর্যটক কোভিড আক্রান্ত হয়ে দিঘায় চলে এলে অনেকের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়। কিন্তু বেসরকারি ভাবে র্যাপিড পরীক্ষা বা আরটিপিসিআর করানো অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য। আবার সরকারি হাসপাতালে র্যাপিড পরীক্ষা করাতে অনেক ক্ষেত্রেই লম্বা লাইন দিতে হয়। অধিকাংশ পর্যটকই সেই ঝক্কি নিতে চাইবেন না।
জেলা প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের ফলে হোটেল ব্যবসায়ীদের লোকসানের বোঝা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়েই হোটেল মালিকেরা ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। গত বুধবার ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসে গোটা ঘটনায় রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের জন্য আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এর পরেই টনক নড়ে জেলা প্রশাসনের। হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি। হোটেল ব্যবসায়ীদের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেন তিনি। এরপর বুধবার বেলায় ওল্ড দিঘায় হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠনের অফিসেই ফের পর্যটকদের জন্য র্যাপিড পরীক্ষা শুরু হয়।
দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুধবার থেকে ফের দিঘায় হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠনের অফিসে পর্যটকদের র্যাপিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এর আগে এক দিনের জন্য খুলেও তা প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার সমস্যা মিটবে বলে আমরা আশাবাদী।’’ তিনি জানান, এই র্যাপিড পরীক্ষার খরচ পর্যটকদেরই বহন করতে হচ্ছে। এক একটি ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট’-এর দাম ২০০ টাকা করে পড়ছে। সেই টাকাই পর্যটকদের বহন করতে হবে। কারও পজিটিভ রিপোর্ট এলে তাঁকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিপ্রদাস।