তাণ্ডব: ভাঙচুর করা হচ্ছে পুলিশের গাড়ি। সোমবার পটাশপুর। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির প্রচার গাড়িতে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ ঘিরে সোমবার উত্তপ্ত হল পটাশপুর। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালায়। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিজেপি কর্মীরা পথ অবরোধ ও বিক্ষোভে সামিল হয়। বিক্ষোভ হটাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটে জখম হন এসডিপিও-সহ জনা পাঁচেক পুলিশকর্মী। পুলিশের কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন কুড়ি জন বিজেপি কর্মী। সোমবার সকালে ঘটনাটি পটাশপুর-১ ব্লকের পাঁচুড়িয়া (সরিদাসপুর) বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। যদিও বিজেপির দাবি, পুলিশকে আক্রমণের ঘটনায় তাদের কেউ জড়িত নয়। তাই গ্রেফতার করা দলীয় কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার একাধিক দাবিতে অমর্ষি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিল বিজেপির। কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকে এলাকার সকল সাধারণ মানুষকে অংশ গ্রহণের জন্য এ দিন টোটোয় করে প্রচার করছিলেন বিজেপির কর্মীরা। বিজেপির অভিযোগ, সকাল ১০টা নাগাদ তাদের প্রচার গাড়ি পাঁচুড়িয়া (সরিদাসপুর) বাসস্ট্যান্ডে এলে তৃণমূল নেতা তাপস মাজির নেতৃত্বে প্রচার গাড়িতে হামলা এবং কর্মীদের মারধর করা হয়। এরপরই তাপস মাজিকে গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূলের পার্টি অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজিপির কয়েকশো কর্মী-সমর্থক।
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পার্টি অফিসে ঢুকে ভাঙচুর এবং মারধর করে। খবর পেয়ে এসডিপিওর নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে অবরোধ তুলতে পার্টি অফিসে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে। তারপর তৃণমূলের নির্দেশে এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ করে। সেই সময় ক্ষিপ্ত জনতা ইট-বাঁশ-লোহার রড দিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয় দুটি পুলিশ ভ্যান। ইটের আঘাতে জখম হন এসডিপিও সহ পাঁচ পুলিশ কর্মী। ঘটনার পরে এলাকা থেকে কুড়ি জন বিজেপি কর্মীকে পটাশপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে।
এবিষয়ে পটাশপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তাপস মাজি বলেন, ‘‘স্মারকলিপি দেওয়ার প্রচার গাড়ি থেকে তৃণমূলের নামে গালিগালাজ করছিল বিজেপি। প্রতিবাদ করায় বিজেপির কর্মীরা আমাদের পার্টি অফিসে ঢুকে কর্মীদের মারধর করে। টিভি, চেয়ার ভেঙে দেয়। তৃণমূলের কেউ ওদের প্রচার গাড়িতে হামলা চালায়নি।’’ কাঁথি সাংগঠনিক বিজেপি সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্মারকলিপি দেওয়ার আহ্বানে প্রচার গাড়ি বেরোতে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। আগামীকাল যে স্মারকলিপি দেওয়া হবে তাতে বিভিন্ন দাবি দাওয়া থাকলেও কাটমানির কোনও উল্লেখ নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এ দিন হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে কর্মীরা পথ অবরোধ করলে তাদের উপর পুলিশ লাঠি চার্জ করে। ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে। ঘটনায় বিজেপির কেউ জড়িত নয়। পুলিশ যে সকল বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করেছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।’’
এগরার এসডিপিও শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘পুলিশ গেলে অবরোধকারীরা পুলিশকে আক্রমণ করে। ইট পাটকেল ছোড়ে। পাল্টা পুলিশ লাঠি চার্জ করলে বিজেপি কর্মীরা লোহার রড, বাঁশ দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। পাঁচ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কুড়ি জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।