হলদিয়ার এই সমবায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত।
পুরুলিয়া এবং নদিয়ার পর এ বার পূর্ব মেদিনীপুর। বুধবার হলদিয়ার একটি সমবায় ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। অভিযোগ, ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছে ডাকাতদল। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার সুতাহাটা থানা এলাকায় একটি সমবায় ব্যাঙ্কে।
অভিযোগ, এক দল ডাকাত ঢুকে পড়ে সমবায় ব্যাঙ্কে। ভল্ট ভেঙে এর পর গ্রাহকদের টাকা লুট করে তারা। শুধু তাই নয়, ডাকাতির পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাঙ্কের সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায় ডাকাতেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রাহক সেজে ব্যাঙ্কে ঢুকে বেশ কিছু সময় রেইকি করার পর হলদিয়ার চকলালপুর গরানখালি দেউলপোতা সমবায় সমিতিতে। ব্যাঙ্কে ডাকাতি করে তিন জনের একটি দল। দু’জনের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। এক জন হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ব্যাঙ্কের কর্মী থেকে গ্রাহকদের প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে দিনে দুপুরে নগদ প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কে ঢুকেই ব্যাঙ্ককর্মীদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রথমেই সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও ওয়াইফাইয়ের খোঁজ নেয় ডাকাতদল। সেগুলি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর ম্যানেজারের কাছে গিয়ে লকার খুলতে চাপ দেয় তারা। লুট করে যাওয়ার সময় ব্যাঙ্কের কর্মী এবং গ্রাহকদের শৌচাগারে ঢুকিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলে যায় ডাকাতদল। পরে দরজা ভেঙে কর্মীরা বাইরে এসে পুলিশে খবর দেয়।
সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী বৃহস্পতি দাসের কথায়, ‘‘বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এক ব্যক্তি ব্যাঙ্কে এসে বাচ্চার নামে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। পরে তিনি ম্যানেজারের কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর বেরিয়ে যায়। এর আধ ঘণ্টা বাদে বেলা ১২টা নাগাদ দুই সঙ্গীকে নিয়ে ওই ব্যক্তি আবার ব্যাঙ্কে আসেন। দু’জন হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাদের কাউন্টারের পিছনে চলে আসেন। এর পর হার্ডডিস্ক, ওয়াইফাই বাক্স ভেঙে সব কিছু নষ্ট করে দিয়ে চলে যান। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্কের লকারে থাকা প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেন ওই তিন জন।’’ সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অপূর্ব দাস বলেন, “মাথায় হেলমেট পরা এক ব্যক্তি আমার চেম্বারে ঢুকে পড়েছিলেন। তাঁকে হেলমেট খুলতে বলায় রিভলভার নিয়ে বলেন, ‘‘আমি ডাকাত।’’ এর পরেই তাঁর পিছন পিছন আরও দু’জন ঢুকে পড়েন আমার ঘরে।’’
সিসিটিভি ফুটেজ না-থাকায় ঘটনার তদন্ত করতে এসে অসুবিধায় পড়েছে সুতাহাটা থানার পুলিশ। কী ভাবে এবং কোথা দিয়ে ডাকাত দল ঢুকেছে, তা দেখা যায়নি। এখন ব্যাঙ্কের আশপাশে যে সব দোকান এবং বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে, তার ফুটেজ সংগ্রহ করে ডাকাতদলকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
কিছু দিন আগে পুরুলিয়া শহর এবং নদিয়ার রানাঘাটে একই সংস্থার গয়নার শোরুমে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তার পরেও পুরুলিয়ায় স্টেট ব্যাঙ্কের একটি শাখায় ডাকাতির চেষ্টা হয়। এ বার ডাকাতির ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।