বাড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত নির্মাণ কর্মী। দাসপুরে। নিজস্ব চিত্র kousiksantra248@gmail.com
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টাকা ঢুকছে আবাস প্রকল্পে। টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে পাকা বাড়ি তৈরির হিড়িক। তবে মিস্ত্রি ও জোগাড়ে পাওয়া না গেলে সময়ে কাজ শেষ হবে কি না সেই নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে। এই নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন উপভোক্তারা। নজর রাখছে পঞ্চায়েতগুলিও।
আবাসের তালিকা নিয়ে রাজ্য জুড়ে কম হইচই হয়নি। তৈরি হয়েছিল অস্থিরতা। অবশেষে সেই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের টাকা পৌঁছনোয় খুশি উপভোক্তারা। ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকের সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই তালিকা ধরে পর্যায়ক্রমে টাকা ঢুকতে শুরু করেছে বলে খবর। চলতি মাসেই সব উপভোক্তার টাকা পেয়ে যাওয়ার কথা। প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে সেই খরচ করে তার তথ্য জমা দিতে হবে। সরকারি নিয়ম মেনে সেই কাজ সঠিক ভাবে হলে তবেই মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা।
এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ কী ভাবে হবে, সেই নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অনেকেই। কারণ সময়ে মিস্ত্রি না পেলে ঘরের ভিতও শুরু করা যাবে না। চায়ের ঠেক থেকে পাড়ার অলি-গলি ঘুরলেই এখন শোনা যাচ্ছে রাজমিস্ত্রির কথা। কোথায় গেলে রাজমিস্ত্রি, জোগাড়ে, নিদেনপক্ষে তাঁদের ফোন নম্বর মিলবে— চলছে সেই আলোচনা। ঘাটাল ব্লকের রাধানগর গ্রামের লক্ষ্মণ মান্ডি বলছিলেন, “ব্যাঙ্কে টাকা এসে গিয়েছে। মেসেজ পেয়েছি। ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। কিন্তু মিস্ত্রি তো পাচ্ছি না। চারদিকে ঘুরছি।”
ঘন ঘন ফোন বাজছে রাজমিস্ত্রিদেরও। ঘাটালের রবি দাস বলছিলেন, ‘‘সারা বছরই টুকটাক কাজ থাকে। এখন আবাসের টাকা ঢুকতেই ব্যস্ততা বেড়েছি। ঘনঘন ফোন আসছে। সবাই কবে সময় আছে, জানতে চাইছে। এই খোঁজ সারা বছর থাকলে আমরা বেঁচে যাব।’’
আবাস প্রকল্পে পঞ্চায়েত পিছু কমবেশি ৮০০ থেকে ১২০০টি বাড়ি হওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তার কাজ শেষ করতে বলা হচ্ছে। মিস্ত্রি না পেয়ে অনেক উপভোক্তা যাচ্ছেন পঞ্চায়েতে। ফাঁপড়ে পড়েছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও। চন্দ্রকোনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ এবং ঘাটালের বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত পালেরা বলছিলেন, “টাকা ঢুকতেই মিস্ত্রির জন্য পঞ্চায়েতে আসছে অনেকে। তা নিয়েই এখন যত মাথাব্যাথা।”
সব উপভোক্তা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি তৈরি করতে পারেন, তার জন্য সক্রিয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন ব্লক বিক্ষিপ্ত ভাবে রাজমিস্ত্রি ও মজুরি নিয়ে কর্মশালা, বৈঠক করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ঘাটালের বিডিও অভীক বিশ্বাস এবং দাসপুর ২ বিডিও প্রবীর শীট বলেন, “তিন মাসের মধ্যে ঘর শেষ করতে বলা হয়েছে। মিস্ত্রির সমস্যা মেটানোর জন্য দ্রুত তাদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।”