—প্রতীকী ছবি।
দোকানের ভিতর থেকে এক তৃণমূল কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল নন্দীগ্রামের সাতেঙ্গাবাড়ি এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম মহাদেব বিষয়ী। তিনি নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে নিজের দোকানের ভিতর থেকে ওই ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। মহাদেব বৃন্দাবনচক দক্ষিণ ২৫৩ নম্বর বুথের তৃণমূল কর্মী। এই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতেঙ্গাবাড়ি বাজারে দীর্ঘ দিন ধরে মহাদেবের একটি ছোট এবং অস্থায়ী মাংসের দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সেই দোকানের ভিতরেই তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মহাদেবকে পিটিয়ে খুন করে দোকানের ভিতর ফেলে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার খবর পেয়েই নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রামের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বৃন্দাবনচক গ্রামে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন মহাদেব। ১৫ দিন আগে তাঁর উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, মহাদেবকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন পদ্মশিবিরের নেতারা। এর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয় বলেও দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। বুধবার ওই এলাকায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর সভা ছিল। তার পরেই গভীর রাতে ওই তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুন করে তাঁর দোকানের ভিতরেই ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। এই ঘটনার প্রতিবাদে বেশ কিছু ক্ষণ রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান দলের কর্মীরা। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।
এই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, “মহাদেব এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দল বদলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রায়ই তাঁর ওপরে চাপ দেওয়া হত। বার বার হুমকি দিয়েও দল বদল করাতে না-পারায় ১৫ দিন আগে মহাদেবকে বেধড়ক মারধর করা হয়।” এই ঘটনায় এলাকার একাধিক বিজেপি নেতা-কর্মী জড়িত বলে দাবি করেছেন বাপ্পাদিত্য।
বিজেপি অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী এই প্রসঙ্গে বলেন, “বিজেপি দেশের সরকার চালাচ্ছে, একাধিক রাজ্যে সরকার চালাচ্ছে, কোথাও আমরা খুনোখুনির রাজনীতি করি না। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটেছে কি না, তা আগে তদন্ত করে দেখা হোক।
বিজেপর তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, “মত্ত অবস্থায় পিকনিকের আসরে ঝামেলা থেকেই এই খুনের ঘটনা বলে আমরা জানতে পেরেছি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।”