উদ্ধার হওয়া সেই কচ্ছপ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল ছড়াল মেচেদায়।
বন দফতরের উদ্যোগে কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে ছেড়ে দেওয়া হয় সমুদ্রে। সমুদ্রে ছাড়ার সময় সেটি সুস্থই ছিল বলে বন দফতরের দাবি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ মেচেদার এক নম্বর মিনি মার্কেটের মাছের আড়তে এক মৎস্যজীবী ওই কচ্ছপ বিক্রি করতে আসেন। ব্যাগ থেকে সেটিকে বের করার পর মাছ ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারেন এটি সামুদ্রিক কচ্ছপ। কচ্ছপ বিক্রি আইনত অপরাধ। তাই অন্য মাছ ব্যবসায়ীরা ওই মৎস্যজীবীকে বসিয়ে রেখে খবর দেন বন দফতরে। ততক্ষণে প্রায় ১৬ কিলোগ্রাম ওজনের কচ্ছপটিকে দেখতে ভিড় জমে যায় বাজারে। ভিড়ের সুযোগ নিয়ে ওই মৎস্যজীবী সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে বন দফতরের পাঁশকুড়া রেঞ্জের ডেপুটি রেঞ্জার অনির্বাণ মিত্র ও বনকর্মী অতুলচন্দ্র ভৌমিক পৌঁছে যান মেচেদায়। তাঁরা কচ্ছপটি অলিভ রিডলে প্রজাতির বলে জানান। এর পর বন দফতরের পক্ষ থেকে কচ্ছপটিকে নিয়ে শঙ্করপুর ও তাজপুরের মাঝামাঝি জায়গায় সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়। ডেপুটি রেঞ্জার অনির্বাণ মিত্র বলেন, ‘‘সমুদ্রে ছাড়ার সময় কচ্ছপটি বেশ চাঙ্গা ছিল। মনে হচ্ছে এটিকে কয়েক ঘণ্টা আগেই ধরা হয়েছিল। এলাকার মানুষকে ধন্যবাদ, ওঁরা কচ্ছপটিকে বিক্রি হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। এটা বন দফতরের প্রচারের সুফল।’’
মেচেদা মিনি মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী ফণীন্দ্রনাথ দে বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি কচ্ছপটিকে মাছের আড়তে নিয়ে এসেছিল তাকে আমরা কখনও এখানে দেখিনি। বিপদ আছে বুঝে সে কচ্ছপ রেখে পালিয়ে যায়।’’
কিন্তু অলিভ রিডলের মতো কচ্ছপ মেচেদায় এল কী করে?
স্থানীয় লোকজনের দাবি, সমুদ্র লাগোয়া এলাকায় বিপন্ন প্রজাতির এই কচ্ছপ বিক্রির অসুবিধা আছে মনে করেই ওই ব্যক্তি মেচেদায় সেটি বিক্রি করতে আসে। শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিদ্যার শিক্ষক গৌতম কুমার বসু বলেন, ‘‘কচ্ছপ শীতল রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী। তাই শীতের শুরুতে উষ্ণতার জন্য তারা সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ায়। এছাড়াও ডিম পাড়ার সময় হলেও এরা সমুদ্র সৈকতে উঠে আসে। ফলে অনেক সময় তারা চোরা শিকারিদের হাতে ধরা পড়ে। এটিকেও সে ভাবেই ধরা হয়েছে মনে হয়। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতায় যে কচ্ছপটিকে ফের সুস্থ অবস্থায় সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়া গিয়েছে এটা খুবই ভাল লক্ষণ।’’