মৃত নবীন মান্ডি। নিজস্ব চিত্র Ranjan Pal * Jhargram
গভীর রাতে নাকা পোস্টে পাহারা দেওয়ার সময়ে হাতির হানায় মৃত্যু হল এক পুলিশ কর্মীর। রবিবার রাতে বন দফতরের লালগড় বিট অফিস সংলগ্ন বুড়াবাবার থান এলাকায়দুর্ঘটনাটি ঘটে।
মৃত বছর ছত্রিশের নবীন মান্ডি লালগড় থানার হোমগার্ড পদে কর্মরত ছিলেন। বাড়ি লালগড় থানার জামবাইদ গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, লালগড় বিট অফিস সংলগ্ন বুড়াবাবার থানের পাশে লালগড় থানার স্থায়ী নাকা পোস্ট রয়েছে। রবিবার রাত দশটা থেকে সেখানে নবীন ছাড়াও আরও দু’জন স্পেশাল হোমগার্ড, একজন এনভিএফ, দু’জন স্ট্র্যাকো জওয়ান ছিলেন। নবীন রাস্তার পাশে থাকা এক ট্র্যাক্টরের সিটে বসেছিলেন। ওই সময়ে পডিহার জঙ্গল থেকে একটি দলছুট দাঁতাল হাতি আচমকা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। হাতি দেখতে পেয়ে আশেপাশে থাকা পুলিশ কর্মীরা পালিয়ে গেলেও নবীন তা টের পাননি। হাতিটি ট্র্যাক্টরে বসে থাকা অবস্থাতেই নবীনকে শুঁড়ে তুলে পিচ রাস্তার উপর আছাড় মারে। বন কর্মীরা এসে হাতিটিকে সরানোর পর ওই পুলিশ কর্মীকে উদ্ধার করে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সোমবার ভোর রাতে সিসিইউতে সেখানেই মৃত্যুহয় তাঁর।
ওই সময়ে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘আমরা একদিকে ছিলাম। নবীন ট্রাক্টরের সিটে বসেছিল। আচমকা যে হাতি চলে আসবে তা আমরা বুঝতে পারিনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এতদিন কাজ করছি। হাতি আসলে আগাম জানতে পারতাম। কিন্তু গতকাল রাতে সেটা জানতে পারিনি। তাহলে আরও সতর্ক থাকতাম।’’ পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন নবীন। ২০১২ সালে হোমগার্ডে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। পরিবারে স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে এবং মা আছেন। নবীনের কাকা সুবোধ মান্ডি বলেন, ‘‘আগেও ওখানে ডিউটি পড়ত ওঁর। কিন্তু হাতির মুখোমুখি কোনওদিন হয়নি। এরকম ঘটনা ঘটবে কেউ ভাবতেইপারছি না।’’
বন দফতর সূত্রে খবর, লালগড় রেঞ্জের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরেই একটি দলছুট হাতি ঘোরাফেরা করছিল। সেই হাতির হানাতেই নবীনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতে আরও একটি হাতি এলাকায় ঢুকে পড়ে। বর্তমানে লালগড় রেঞ্জ এলাকায় দু'টি হাতি রয়েছে। লালগড় রেঞ্চটি মেদিনীপুর ডিভিশনের অন্তর্গত। সেখানকার ভারপ্রাপ্ত ডিএফও মণীশ কুমার যাদব বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।তবে ওই এলাকায় যে দলছুট হাতি রয়েছে তা আগাম জানানো হয়েছিল মেসেজের মাধ্যমে। মৃতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’