নির্বাচনী বিধি সংশোধন নিয়ে কেন্দ্র ও কমিশনের ব্যাখ্যা চাইল সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
নির্বাচনী বিধি সংশোধনের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, বুথের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রার্থীদের ভিডিয়ো যাতে আমজনতা দেখতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচনী বিধি সংশোধন করা হয়েছে। ওই মামলায় বুধবার কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে এই মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
কংগ্রেসের হয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। অবাধ এবং নিরপেক্ষ ভাবে ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মামলাকারীর বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে একতরফা ভাবে ১৯৬১ সালের নির্বাচন বিধি সংশোধনে তাদের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় না। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের এজলাসে জয়রামের হয়ে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। সিংভি জানান, বুদ্ধি করে নির্বাচনী বিধি সংশোধন করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখার উপর নিয়ন্ত্রণ না আনলে ভোটারদের পরিচয় প্রকাশ্যে চলে আসতে পারে। সিংভির বক্তব্য, কে কাকে ভোট দিচ্ছেন, তা কোনও ভাবেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকাশ্যে আসতে পারে না।
বস্তুত গত মাসেই নির্বাচনী বিধি সংশোধন করেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের সময়ের ভিডিয়ো, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও নথির প্রতিলিপি চেয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদ প্রাচা। সেগুলি প্রাচাকে দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তার জেরেই যে নির্বাচনী বিধি সংশোধন, তা মেনে নিয়েছেন আইন মন্ত্রক ও নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। কংগ্রেসের দাবি, এ থেকেই বোঝা যায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা দ্রুত কমছে।
সংশোধনীর আগে নির্বাচনী বিধির ৯৩ (২-এ) ধারায় বলা হয়েছিল, ব্যালট পেপার-সহ কয়েকটি নথি ছাড়া নির্বাচন সংক্রান্ত বাকি সব নথি আমজনতা খতিয়ে দেখতে পারবেন। কিন্তু সংশোধিত বিধি অনুসারে, ওয়েবকাস্টিং, ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ অন্য বেশ কিছু নথি দেখার কোনও অধিকার থাকবে না আমজনতার! নতুন নিয়মে শুধুমাত্র ভোটের নিয়ম এবং প্রার্থীর হলফনামা সংক্রান্ত নথিগুলিই (মনোনয়নপত্র, পোলিং এজেন্টদের নিয়োগপত্র, ভোটের ফল ও নির্বাচনের জন্য ব্যবহৃত প্রার্থীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ইত্যাদি) প্রকাশ্যে আনা হবে। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বৈদ্যুতিন নথির নাগাল মিলবে না।