রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র
মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে গিয়ে রাজ্যপালকে শুনতে হয়েছিল ‘গো ব্যাক’। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপড়েনের ছাপ এবার এসে পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরেও। পিংলার বাগনাবাড় হাইস্কুলের শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে নাম ছাপিয়েও রাজ্যপালের সফর বাতিলের আবেদন জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে চলেছে এই স্কুলের শতবর্ষের অনুষ্ঠান। ২৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আসার কথা ছিল সেখানে। আমন্ত্রণপত্রে লেখা রয়েছে ওই দিন অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেবেন তিনি। রাজ্যপালের সঙ্গেই ওই অনুষ্ঠানে থাকার কথা শিক্ষারত্ন পুরস্কার প্রাপ্ত গৌরীশঙ্কর মাইতি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দার-সহ কয়েকজনের। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় গত ২২ ডিসেম্বর। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন প্রধান শিক্ষক রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে জানান প্রথমার্ধের ওই অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। রাজ্যপালকে তাঁর সফরসূচি বাতিলের আবেদনও জানান তিনি।
শেষ মুর্হূতে কী এমন হল যে রাজ্যপালকে আসতে বারণ করতে হচ্ছে? প্রধান শিক্ষক সুশান্তকুমার ভৌমিকের দাবি, “শুক্রবার প্রথমার্ধের ওই অনুষ্ঠান অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। তাই রাজ্যপালকে আসতে বারণ করা হয়েছে। কারণ তিনি পরে সময় দিতে পারবেন না। তবে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক-সহ অনেক অতিথি দ্বিতীয়ার্ধে আসবেন বলে জানিয়েছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এর জন্য কেউ আমাকে চাপ দেয়নি।”
যদিও বিষয়টিকে মোটেও সহজভাবে নিচ্ছে না বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজ্যপালকে আনার জন্য চিঠি দিলেন। আমন্ত্রণপত্রও ছাপালেন। মাঝে কী এমন হল যে রাজ্যপালকে আসতে না বলা হল। বর্তমান রাজ্যপাল মানুষের সঙ্গে মিশে সংবিধান রক্ষা করতে চাইছেন। তাই রাজ্যের শাসকদলের চাপেই রাজ্যপালকে আসতে না করা হয়েছে। এটা লজ্জার।”
তৃণমূল অবশ্য রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ মানেনি। তবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে নিয়ে যে অসন্তোষ রয়েছে তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কথায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতির সরাসরি অভিযোগ, ‘‘বর্তমান রাজ্যপাল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বার বার রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। এমন অসাংবিধানিক কার্যকলাপের জন্য এই রাজ্যপালের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে একই মঞ্চে থাকব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তিনি জানান, রাজ্যপাল যেহেতু আসছেন না তাই তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা ওই অনুষ্ঠানে যাবেন।