—প্রতীকী চিত্র।
বাড়ির মধ্যে সাপের কামড়ে মৃত্যু হল এক তিন বছর বয়সি শিশুর। পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ফ্রিজ়ের তলায় লুকিয়ে থাকা একটি গোখরো সাপ পায়েলি দাস নামে শিশুটিকে ছোবলে মারে। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, সাপের কামড়ের পর চিকিৎসকের কাছে না-গিয়ে ওঝার শরণাপন্ন হয়ে শিশুর মৃত্যু ডেকে এনেছে পরিবারই। এ নিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি সচেতনতামূলক পোস্ট করেছেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস।
ক্ষীরপাই শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাস। সব্জি ব্যবসায়ী প্রসেনজিতের ছোট্ট মেয়ের জন্মদিন ছিল শুক্রবার। বৃহস্পতিবার মেয়ের জন্য পুতুল কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু আচমকাই অঘটন। পরিবার সূত্রে খবর, ফ্রিজের পাশে লুকিয়ে থাকা একটি গোখরো সাপ ছোবল মারে তিন বছরের পায়েলিকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এক জন পরিবেশকর্মী। তিনি বিষধর সাপটিকে উদ্ধার করেন। ওই পরিবেশকর্মী জানিয়েছেন, মেয়েটিকে সাপে কামড়ানোর পর দু’জন ওঝাকে ঝাড়ফুঁক করার জন্য আনে পরিবার। অনেক চেষ্টাচরিত্র করে দুই ওঝার কেউই মেয়েটিকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি। তার পর তিন বছরের শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পরিবার। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রশাসন এবং বিশেষজ্ঞদের মতে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ নষ্ট করেছেন দুই ওঝা। কুসংস্কারের জন্য শিশুটিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে পরিবারই। ওই ঘটনার কথা ফেসবুক পোস্ট করেন মহকুমা শাসক। তাতে তিনি লেখেন, ‘‘বছর তিনেকের পায়েলি দাসের জন্মদিন পালন হওয়ার কথা ছিল। পুতুল কিনেছিলেন মেয়ের বাবা। সেই পুতুলও জলে ভাসিয়ে দিলেন অসহায় বাবা।’’ তিনি সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে বলেন। তিনি লেখেন, ‘‘চারিদিকে এখন ঢাকের আওয়াজ। মাইকের কলতানে মুখরিত চারিদিক। পুজো কমিটিগুলির কাছে একান্ত অনুরোধ, সাপের কামড় নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করুন, আপনাদের এলাকার পরিবেশকর্মীদের ডাকুন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাঝেমাঝে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান থাকুক। আপনারাও সচেতন করুন সবাইকে।’’ আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এত প্রচার করা হচ্ছে, তার পরেও আজকের দিনেও ওঝার দ্বারস্থ হচ্ছেন। বাড়ি থেকে কাছেই হাসপাতাল, সেখানে নিয়ে যেতে দেরি করায় মৃত্যু হয়েছে। পুলিশকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’