বুলবুলের দাপটে বিধ্বস্ত। ফ্রেজারগঞ্জে।—ছবি পিটিআই।
বিভিন্ন সরকারি দফতরকে পৃথক ভাবে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা করার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবার ১৪টি দফতরকে নিয়ে তৈরি টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। ওই সব দফতরের রিপোর্টের ভিত্তিতে ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে। এর আগে বুলবুলের প্রভাব খতিয়ে দেখতে রাজ্যে প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র। প্রশাসনের একাংশের ধারণা, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসার আগেই ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি রাখতে চাইছে রাজ্য। যদিও এ দিন ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোনও তথ্য দেয়নি নবান্ন। আজ, বুধবার বসিরহাটে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা তাঁর।
এর মধ্যেই পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে সুন্দরবনের দ্বীপভূমির বহু এলাকায়। বিদ্যুৎ পরিষেবাও স্বাভাবিক হয়নি সর্বত্র। বিদ্যুতের সমস্যার ফলেই জল পরিশোধন করে সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। মঙ্গলবার জেনারেটর চালিয়ে গোসাবায় জল পরিশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে বালতি-কলসি নিয়ে মানুষের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। নৌকাতেও জল নিয়ে গিয়েছেন অনেক দ্বীপের বাসিন্দারা।
ত্রাণের ত্রিপল, কম্বল, কেরোসিনও পর্যাপ্ত পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ এসেছে দ্বীপভূমির নানা প্রান্ত থেকে। এলাকায় দলবাজির অভিযোগও তুলছে বিরোধীরা। সর্বত্র ত্রাণ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাঘাটের অনেক জায়গায় এখনও গাছের ভাঙা ডাল পড়ে রয়েছে। পাথরপ্রতিমা, সাগর, নামখানার বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত। সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জেও একই সমস্যা। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে এখনও কয়েক দিন সময় লাগবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
পর্যটনের ভরা মরসুমে বুলবুল বড়সড় ধাক্কা দিয়ে গেল বলে জানাচ্ছেন সুন্দরবনের ব্যবসায়ীরা। ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটন বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক অনিন্দ্য গুহঠাকুরতা। সুন্দরবন ওয়াটার পিপলস সোসাইটির সভাপতি হরেন ঘড়ুই বলেন, ‘‘বুলবুলের কারণে সমস্ত ট্যুর বাতিল করতে হচ্ছে। আগে থেকে যে-সব বুকিং ছিল, তা-ও বাতিল হয়েছে। বহু পর্যটককে টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে।’’
মঙ্গলবারও নামখানায় ট্রলার উল্টে নিখোঁজ ছয় মৎস্যজীবীর খোঁজ মেলেনি। ডুবরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।