বিস্কুট খাওয়ানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় নাবালককে। —প্রতীকী চিত্র।
বিস্কুট কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে আট বছরের এক নাবালককে গলা টিপে খুন করেছিলেন এক যুবক। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল এলাকায়। অবশেষে সেই হত্যাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল আদালত। বুধবার দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন চুঁচুড়া আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় শর্মা।
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে সৌম্যজিৎ দাস নামে বছর এগারোর এক কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার হন জনৈক অরবিন্দ তাঁতি। তদন্তে উঠে আসে মৃত নাবালকের মায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল অরবিন্দের। কিন্তু সেই সম্পর্কের অবনতি হয়। আর যোগাযোগ রাখতে চাননি প্রেমিকা। তারই প্রতিশোধ নিতে প্রেমিকার পুত্রকে খুন করেছিলেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি অরবিন্দ।
আদালত সূত্রের খবর, সৌম্যজিতের বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর ছেলে থাকত মায়ের কাছে। এর বেশ কিছু দিন পর ব্যান্ডেলের লিচুবাগান এলাকার বাসিন্দা অরবিন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় সৌম্যজিতের মায়ের। একসঙ্গে ব্যান্ডেলের লালবাবা আশ্রমে ভাড়া থাকতে শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে যুগলের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ছেলেকে হুগলির কৃষ্ণপুরে বাপের বাড়িতে ওঠেন মহিলা। অরবিন্দ এই বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি।
২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় ছোট্ট সৌম্যজিৎ। পরের দিন হুগলি স্টেশন লাগোয়া একটি মন্দিরের পাশে তার দেহ মেলে। ঘটনার তদন্তে নেমে অরবিন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন প্রসেনজিৎ ঘোষ তখন ব্যান্ডেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। সরকারি আইনজীবী ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। গত সোমবার চুঁচুড়া আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক ধৃত অরবিন্দকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার শাস্তি ঘোষণা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-সহ দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে অরবিন্দকে। অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি মৃতের মাকে দুই লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছে আদালত। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘সঠিক সময়ে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী অফিসার। চার্জ ফ্রেম হওয়ার পরে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। আদালত অরবিন্দ তাঁতিকে যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছে।’’