রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে লগ্নি আনার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া দেশ সফরের মধ্যেই তাঁর সরকারের জন্য সুখবর। বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ আসছে বাংলায়। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারকে ৩,২০০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। মূলত পরিকাঠামো উন্নয়নেই খরচ করতে হবে এই অর্থ। নবান্ন সূত্রে খবর, বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই খরচ করা হবে রাস্তাঘাটের উন্নতিতে। পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো উন্নয়নও তার মধ্যে রয়েছে বলে খবর।
সড়কপথ ছাড়া জলপথ পরিবহণকেও বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে এই টাকা কতটা কোথায় কী ভাবে খরচ হবে, তা এখনও সুনির্দিষ্ট ভাবে চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে পুলক বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে এই অর্থ আসছে বলে আমি শুনেছি। তবে পরিকাঠামো উন্নয়নে এই টাকা কী ভাবে খরচ হবে সে ব্যাপারে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।’’
রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, কেন্দ্র সড়ক যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। বারবার দরবার করেও তা পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত রাজ্যের টাকাতেই গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতার সরকার। গত বাজেট অধিবেশনে বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ করার সময় একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যার নাম দেওয়া হয় ‘রাস্তাশ্রী প্রকল্প’।
এই প্রকল্পের অধীনে ১১,৫০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করবে বলে ঘোষণা করা হয় বাজেটে। প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। নতুন রাস্তা তৈরির পাশাপাশি পুরনো রাস্তা মেরামত করার কথাও বলা হয়েছিল রাস্তাশ্রীতে। সেই কাজ শুরুও হয়েছে জেলায় জেলায়। নবান্ন সূত্রে খবর, কাজের নিরিখে এখনও পর্যন্ত শীর্ষে রয়েছে নদিয়া জেলা।
প্রশাসনিক মহলের অনেকের মতে, বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে ঋণ বাবদ এই অর্থ পাওয়া রাজ্য সরকারের পক্ষে স্বস্তির হল। মুখ্যমন্ত্রী গত এক-দেড় বছরে একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছিলেন, বিভিন্ন খাতের বাজেট কাটছাঁট করে তাঁকে রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতির কাজ করতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাঙ্কের এই অর্থ সে দিক থেকে সাজ্য সরকারের জন্য খুবই সুবিধাজনক হচ্ছে।
তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে মমতা স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, এ বার তাঁর পাখির চোখ শিল্পায়ন। রাজ্যে লগ্নি টানার লক্ষ্যেই এই মুহূর্তে স্পেন সফরে রয়েছেন মমতা। সেখানে মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় দু’টি বাণিজ্য বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর দুবাইয়ে পৌঁছে সেখানে বণিকমহলের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তাঁর। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পরিকাঠামো একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তার মধ্যেই বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে রাজ্য সরকারের ঋণ পাওয়ার সুখবর।