বন্ধ কলকারখানার শ্রমিকদের গত ১১ বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে শ্রম দফতর। ফাইল চিত্র।
বন্ধ কলকারখানার শ্রমিকদের কথা ভেবে এক সময় জ্যোতি বসুর সরকার একটি প্রকল্প শুরু করেছিল। কিন্তু সেই প্রকল্পের লাভ রাজ্যের খুব বেশি শ্রমিক পায়নি বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু গত ১১ বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় বন্ধ কলকারখানার শ্রমিকরা পেয়েছেন প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষে এই খাতে দফতর ইতিমধ্যেই ৫০ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। উত্তরবঙ্গের চা বাগান থেকে শুরু করে রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ১৭৫টি বন্ধ ছোট ও মাঝারি শিল্প সংস্থার সাড়ে ২৭ হাজার শ্রমিক এই ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই জমানায় বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা পুজো বা ঈদের আগে বছরে অতিরিক্ত এক মাসের ভাতা পান।
শ্রম দফতরের এই প্রকল্পের আওতায় নেই একদা দুই বড় সংস্থা জেশপ ও ডানলপের শ্রমিকরা। ওই দু’টি বন্ধ সংস্থার কয়েকশো শ্রমিককে মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেয় রাজ্য শিল্প দফতর। শ্রমদফতর সূত্রে খবর, বাম জমানায় মোট ২৩৯টি বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের ভাতা দেওয়া হত এখন সেই কারখানার সংখ্যা নেমে এসেছে ১৯৪-এ। তবে সংশ্লিষ্ট কারখানা চালুর পর আরও ছ’মাস পর্যন্ত ভাতা দেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে, তাতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ছ’ মাসের বদলে এখন তা দু’মাস করা হয়েছে। সঙ্গে বন্ধ কলকারখানার সংখ্যা অনেকটাই কমেছে বলে দাবি শ্রম দফতরের।
গত ১১ বছরে এই খাতে এখনও পর্যন্ত সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪৬০ কোটি টাকা। দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এখনও সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষের পুরো হিসেব তাদের হাতে আসেনি। তাই এই অর্থের পরিমাণ যে ৪৬০ কোটি টাকার বেশি, তা বলাই যায়। বামফ্রন্ট জমানার থেকে প্রায় ৯০ কোটি টাকা বেশিখরচ করেছে রাজ্য শ্রম দফতর।
বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের মাসিক ভাতা চালু হয়েছিল ১৯৯৮-’৯৯ সালে জ্যোতিবাবুর জমানায়। অবসরের নির্দিষ্ট সময় (৫৮ বা ৬০ বছর) পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শ্রমিক এই ভাতা পাওয়ার অধিকারী। বর্তমানে শ্রম দফতর মাসে মাথাপিছু ১৫০০ টাকা করে দেয়। বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের আবেদন যাচাই ও নির্দিষ্ট নিয়মাবলী পূরণ করার পর তা দেওয়া হয়। বামফ্রন্ট জমানার শেষ ১৩ বছরে এই খাতে মোট ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৩৭৪ কোটি টাকা। মমতার আমলে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০ কোটি টাকার বেশি। অর্থবর্ষের শেষ মাসের হিসেব যোগ করলে তা আরও কয়েক কোটি টাকা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।