নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট রয়েছে। তার প্রস্তুতি এখন থেকে শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। সেই লক্ষ্যেই এ বার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর আগামী ১৪ নভেম্বর বিকেল ৪টের সময় নবান্নে এই বৈঠক করবেন তিনি। এই বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, উদ্যানপালন মন্ত্রী সুব্রত সাহা, মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে। সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী ছাড়াও ওই দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে খবর। উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরাও।
নতুন বছর শুরু হলে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। আর তার পরেই শুরু হয়ে যাবে নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় প্রস্তুতি। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন যে স্থানীয় ইস্যুতেই হবে, তা ভালই বোঝেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজ্যের মানুষের কাছে কম দামে শাকসব্জি, ডিম, মাছ-মাংস-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ বলেই মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাজারগুলিতে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন বলেও সূত্রের খবর। সেখানেই তিনি জেনেছেন শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে অস্বাভাবিক হারে। তার পরেই তিনি এই বৈঠকের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকদের। শুনতে এই বৈঠক প্রশাসনিক মনে হলেও আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের রণনীতি। এমনটাই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের। কারণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের সঙ্গে রাজ্যের প্রায় সব মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে তা পঞ্চায়েত ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা বড় চ্যালেঞ্জও বটে।
ফলে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি বৈঠকে বসে তিনি সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে চান। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়," এই বৈঠকের নেপথ্যে পঞ্চায়েত ভোটের রাজনীতি আছে কি না, আমাদের জানা নেই। মুখ্যমন্ত্রী কোনও নির্দেশ দিলে তা আমরা যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করে এসেছি এবং তা করব। তাই শীর্ষ আধিকারিকদের কাছে ১৪ তারিখের বৈঠক হতে চলেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"