Sabyasachi Dutta

TMC, BJP: সব্যসাচীর তৃণমূলে ফেরা পাকা, ‘ওকে নিয়ে নিতে বলেছি’, জানালেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিধায়ক পদে শপথ নিতে এসেছিলেন মমতা। শপথের আগেই তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমি আজই ওকে নিয়ে নিতে বলেছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২১ ১৪:১৩
Share:

সব্যসাচী এবং মমতা। —ফাইল চিত্র।

অনেক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল বিজেপি নেতা তথা বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত পুরনো দল তৃণমূলে ফিরবেন। তবে সেই জল্পনা আর রইল না। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তিনিই সব্যসাচীকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিধায়ক পদে শপথ নিতে এসেছিলেন মমতা। শপথের আগেই তিনি ঘনিষ্ঠমহলে বলেন, ‘‘আমি আজই ওকে নিয়ে নিতে বলেছি।’’

Advertisement

কবে আনুষ্ঠানিক ভাবে সব্যসাচী তৃণমূলে যোগ দেবেন, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই দিন ক্ষণ পাকা হয়ে যাবে। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মমতার বক্তব্য শোনার পরে সব্যসাচী টেলিফোনে জানান, তিনি এখনই কিছু বলবেন না। সব দেখে শুনে তবেই যা বলার বলবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের পুজোর মুখেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন সব্যসাচী। ২০২০ সালেও এক বার তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এখন পুজোর মরসুমে সেই একই জল্পনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার তা স্পষ্ট হয়ে যায়। একদা মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপি-তে যোগ দেন সব্যসাচী। তৃণমূলে থাকার সময়েই তাঁর বাড়িতে মুকুলের লুচি-আলুরদম খেতে যাওয়া নিয়ে হইচই হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। আবার মুকুল তৃণমূলে ফিরে গেলেও সব্যসাচীর সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলেই জানা গিয়েছে।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র টিকিটে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই সব্যসাচী তৃণমূলে ফিরতে চান বলে শোনা যায়। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে এমনটা জানা গিয়েছিল যে, সব্যসাচীকে তৃণমূলে ফেরানো নিয়ে তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত শাসকদলের দুই বিধায়ক সুজিত বসু ও তাপস চট্টোপাধ্যায়ের আপত্তি এখনও রয়েছে। তবে মমতা বৃহস্পতিবার যে মন্তব্য করেছেন তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, কোনও আপত্তিই আর সব্যসাচীর প্রত্যাবর্তনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না।

পুজো মিটলেই চার আসনে উপনির্বাচন। তার আগে সব্যসাচী ফুলবদল করলে বিজেপি-র কাছে তা বড় ধাক্কা হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, সব্যসাচী এখন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক পদে রয়েছেন। সদ্যই তাঁকে খড়দহ উপনির্বাচনের জন্য তৈরি কমিটিতে ‘ইনচার্জ’ করেছেন নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইডেজসিসি) বিজেপি আয়োজিত গত বছরের মতো এ বারেও হবে দুর্গাপুজো। আর তাতেও বিজেপি রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সব্যসাচীকেই আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছে।

বিজেপি-তে থাকলেও সব্যসাচীর বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে দলবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ উঠছিল বার বার। এই দুর্গাপুজো নিয়েও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দ্বৈরথে জড়ান তিনি। এই বছর পুজো হবে কি না তা নিয়ে বিজেপি দোলাচলে থাকায় সব্যসাচী সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত বার ভোট ছিল তাই পুজো হয়েছে। এ বার ভোট নেই তাই পুজোও নেই। এর প্রেক্ষিতেই দিলীপ বলেন, ‘‘বিধি অনুযায়ী পুজো হওয়া উচিত। ভোট দেখে পুজো হওয়া ঠিক নয়। যাঁরা পুজো করেছিলেন তাঁদের চিন্তাভাবনা করা উচিত।’’ এর পরে বুধবারও দিলীপের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে লখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে। সেখানে তৃণমূল-সহ বিরোধীদের যেতে না দেওয়ার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন সব্যসাচী। আর তাতেই দিলীপের সঙ্গে দ্বৈরথ। মঙ্গলবার দিলীপ যোগী আদিত্যনাথের সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপই করেছে।’’ বুধবার সব্যসাচী বলেন, ‘‘কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া পদ্ধতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এতো তালিবান শাসন নয়।’’ বুধবার সব্যসাচী ওই মন্তব্য করার পর থেকেই জল্পনা তৈরি হয় যে সব্যসাচীর তৃণমূলে ফেরাটা পাকা হয়ে গিয়েছে। সেটা এখন স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement