মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিষয় আলাদা আলাদা। রাস্তাও পৃথক। কিন্তু আলাদা বিষয়কে হাতিয়ার করেই আজ, বৃহস্পতিবার পথে নামছে রাজ্যের প্রধান তিন রাজনৈতিক পক্ষ তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) নামে বহু মানুষের নাগরিক মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে আজ সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে শাসক তৃণমূল। ওই মিছিলে পা মেলানোর কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ বহু প্রথম সারির নেতা-নেত্রীকেই দেখা যাবে উত্তর কলকাতার রাস্তায়। প্রতি জেলার ব্লকে ব্লকে এনআরসি-র প্রতিবাদে স্থানীয় স্তরে দলকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। জেলার কর্মসূচি শেষে আজ কলকাতায় স্বয়ং মমতার নেতৃত্বেই শাসক দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি।
তৃণমূল যখন বি টি রোড ধরে উত্তর কলকাতায় মিছিল করবে, সেই সময়ে মধ্য কলকাতার প্রাণকেন্দ্রের কাছে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করবে প্রদেশ কংগ্রেস। সেই সমাবেশে থাকার কথা লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা অধীর চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানদের। প্রদেশের এই সমাবেশের জন্যই আজ দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বৈঠকে ডাক পেয়েও যাচ্ছেন না সোমেন ও মান্নান। অর্থনেতিক মন্দা ও গণতন্ত্র লুণ্ঠনের অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেশন দুর্নীতি, বাড়তি বিদ্যুৎ মাসুলের অভিযোগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই সমাবেশ। দূরের জেলার কংগ্রেস কর্মীরা বুধবারই শহরে পৌঁছেছেন, অনেককে রাখা হয়েছে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন এবং ধর্মতলার আশেপাশে আরও কিছু জায়গা থেকে আজ সমাবেশের আগে মিছিল যাবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে।
এই দুই দল রাস্তায় নামার আগেই সিঙ্গুর স্টেশনের কাছে জমায়েত করবে বামেদের ১২টি যুব ও ছাত্র সংগঠন। সকলের জন্য কাজ, কম খরচে পড়াশোনা ও শিল্পের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে তাদের নবান্ন অভিযান শুরু হবে আজ। হুগলির পুলিশ বামেদের মিছিল-পথের চূড়ান্ত অনুমতি দেয়নি। বাম যুব নেতৃত্ব অবশ্য হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে তাঁরা এগোবেন। বাধা পেলে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ হবে। পদযাত্রা আজ রাতেই পৌঁছবে হাওড়ায়। পরদিন, শুক্রবার আবার হাওড়া স্টেশনের সামনে থেকে মিছিল। হাওড়ার পুলিশ কমিশনারেট ফোরশোর রোড দিয়ে যাওয়ার কথা বললেও বামেরা তাতে নারাজ। ফলে, সংঘাতের আবহেই শুরু হচ্ছে নবান্ন অভিযান। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্রের কথায়, ‘‘আমরা পূর্বঘোষিত পথ ধরেই নবান্নের দিকে যাব। বাধা দিলে পরিস্থিতি সামলানোর জন্য প্রশাসনকে তৈরি থাকতে হবে!’’