Mamata Banerjee

প্রশাসক মমতা আরও কড়া, আমলাদের কাজের বার্ষিক মূল্যায়নের উপরেও সরাসরি নজর দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এমন অবস্থানের সময়টা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনকে কড়া দাওয়াই দিয়ে চলেছেন মমতা।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ ০৭:৫৪
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে তাঁর ভূমিকা যে আগের তুলনায় বেশ কড়া হতে চলেছে, সেই বার্তা পর পর দু’টি বৈঠকে আলাদা ভাবে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার আমলাদের কাজের বার্ষিক মূল্যায়নের উপরেও তাঁর সরাসরি নজর থাকতে চলেছে। সূত্রের দাবি, তাঁর সঙ্গে কথা বলে তবে আমলাদের মূল্যায়নে নম্বর দেওয়ার নির্দেশ মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাকে দিয়েছেন মমতা।

Advertisement

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এমন অবস্থানের সময়টা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনকে কড়া দাওয়াই দিয়ে চলেছেন মমতা। বিভিন্ন খামতি এবং গাফিলতিতে বার করে চেপে ধরছেন বিভিন্ন আধিকারিককে। তাই এ বার আধিকারিকদের মূল্যায়নেও তাঁর সরাসরি নজর রাখার গুরুত্ব অনেক।

সারা বছর ধরে কী কাজ তাঁরা করেছেন, ‘অ্যানুয়াল কনফিডেনশিয়াল রিপোর্ট’ (এসিআর বা বার্ষিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট)-এ তা লিখতে হয় অফিসারদের। নতুন ভাবনা, কাজে অভিনবত্ব, সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা, কাজের গুণমান ইত্যাদি বিবিধ বিষয় সেই রিপোর্টে থাকে। সেই রিপোর্ট পৌঁছয় মুখ্যসচিবের কাছে। তিনি তা খতিয়ে দেখে মতামত এবং নম্বর (সর্বোচ্চ ১০ নম্বরের মধ্যে) লেখেন। তার পরে রিপোর্টটি পৌঁছয় দফতরের মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। প্রবীণ আমলাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, প্রথা অনুযায়ী, মুখ্যসচিব যে নম্বর বা মতামত লিখছেন, তার সঙ্গে সহমত হতে পারেন মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী। আবার তা না-ও হতে পারেন তাঁরা। ফলে সেই মতো নিজেদের মূল্যায়ন রিপোর্টে জানানোর সুযোগ থাকে তাঁদের কাছেও।

Advertisement

সূত্রের দাবি, মুখ্যসচিবকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, এ বার থেকে সেই এসিআর-এ নম্বর দেওয়ার আগে কথা বলে নিতে হবে তাঁর সঙ্গে। মমতা মনে করছেন, এমন অনেক আধিকারিক রয়েছেন, যাঁরা ভাল নম্বর পেতে পারেন অথচ তা দেওয়া হয় না। আবার অনেকে এমনও রয়েছেন, যাঁদের অহেতুক দেওয়া হয় ভাল ভাল নম্বর। কাজের গুণমানের সঙ্গে মূল্যায়নের সামঞ্জস্য আনতে চাইছেন মমতা।

প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, এক জন আমলার কর্মজীবনে এই এসিআর এবং তাতে থাকা নম্বরের অসীম গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, পদোন্নতি, কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে ডেপুটেশন ইত্যাদি প্রশ্নে বিগত পাঁচ-সাত বছরের এসিআর খতিয়ে দেখা হয়। সুতরাং, সেই রিপোর্ট খারাপ থাকলে ফল ভুগতে হতে পারে সংশ্লিষ্টকে। এক কর্তার কথায়, “আইএএস এবং আইপিএস— উভয়ের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ কি না, তা স্পষ্ট নয়। জেলাশাসক এবং মূল দফতরগুলির ক্ষেত্রেই হয়তো এই পদ্ধতি অনুসরণ হতে পারে। কারণ, আধিকারিকদের সংখ্যা বিপুল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement