মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানে জোর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সে কাজে জমির প্রয়োজন থাকলেও রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণে ততটা আগ্রহী থাকে না।
বুধবার শিল্প পর্ষদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, বেসরকারি যে জমিতে চাষ হচ্ছে না, সেই জমির মালিক রাজি থাকলে শিল্পের স্বার্থে তা কেনার ব্যবস্থা হতে পারে। তবে জোর করে তা হবে না, এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা।
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, সরকারি এবং আধা সরকারি সংস্থাগুলির লিজ়ে থাকা জমিতে মালিকানা অধিকার (ফ্রি-হোল্ড) সংক্রান্ত সরকারি আদেশনামা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি লিজ়ের জমিতেও ফ্রি-হোল্ড দিতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন হয়েছে। শীঘ্রই সরকারি আদেশনামা প্রকাশিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন জমিগুলিতে জট থাকে দীর্ঘ দিন ধরে। ফ্রি-হোল্ড হলে বরং জমির মালিক সেটির ভবিষ্যৎ নিজেই স্থির করতে পারবেন। অন্য দিকে সরকারের আয় বাড়বে।
মমতা বলেন, “বার বার সরকারের কাছে আসার সময় নেই। ফ্রি-হোল্ড পেলে শিল্প বা তেমন কিছু করা যায়। এটা সারা জীবনের জন্য নিজের হয়ে যাবে। রাজ্যের আয় হবে। সব বণিকসভাকে জানান, তারা উৎসাহিত হবে।”
দ্বিতীয় পদ্ধতিতে সরকার প্রস্তাবিত শিল্প-আর্থিক করিডরের আশেপাশে প্রায় আট হাজার একর জমি শিল্প এবং শিল্পতালুকের জন্য চিহ্নিত করছে। সেগুলিকে ছোট-মাঝারি-বড় শিল্প বা শিল্পতালুকের উপযুক্ত পরিকাঠামোয় সাজানো হবে। এই প্রসঙ্গেই মমতা বলেন, “বেসরকারি জমি, যেখানে চাষ হয় না, সেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদি জমি বিক্রি করতে চায় তা হলে শিল্প হতে পারে। বিক্রেতা যদি ইচ্ছুক হন, তবে তা কেনা হোক। জোর করে যেন না হয়।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “যেখানে জমি আর্থিক করিডর, শিল্প বা অনুসারির জন্য বরাদ্দ হচ্ছে, সেই জমিগুলোতে ব্যাখ্যা দিয়ে হোর্ডিং লাগাতে হবে। লোকে জানবে, এখানে শিল্প হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, রঘুনাথপুর-ডানকুনি-হলদিয়া-তাজপুর করিডর হবে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। উত্তরবঙ্গে প্রস্তাবিত দার্জিলিং মোড়-কোচবিহার পর্যন্ত ৬৩৯ কিলোমিটার শিল্প করিডরও হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে মালদহ। এই কাজে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজার সঙ্গে শিল্পসচিব বন্দনা যাদব, ভূমিসচিব স্মারকী মহাপাত্র, পূর্তসচিব অন্তরা আচার্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মমতার কথায়, “মহিলাদের দিয়ে কাজটা করাতে চাই। বাবুল (সুপ্রিয়) না-ও থাকতে পারেন এই কমিটিতে।”
মমতা জানান, রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতে প্রায় ২৬০০ একর জমি রয়েছে। তাঁর নির্দেশ, সিলিকন ভ্যালিতে কেউ জমি নিয়েও কাজ শুরু না করলে, তা ফিরিয়ে নেওয়া হবে।