হবিবপুরের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে বসবাসকারী মতুয়া ও নমঃশূদ্ররা ইতিমধ্যেই দেশের নাগরিক— ফের এক বার জোর দিয়ে এ কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়া-অধ্যুষিত রানাঘাটের জনসভায় সোমবার নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘কত সাল থেকে এখানে আছেন? কেউ ’৫০, কেউ ’৭০, কেউ স্বাধীনতার আগে থেকে আছেন। তাঁরা এমনিতেই নাগরিক। তুমি (বিজেপি) আবার নাগরিকের মোয়া খাওয়াবে কী?’’
গত লোকসভা ভোটে মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূল পিছিয়ে পড়েছিল। নাগরিকত্বের প্রশ্নে মতুয়া প্রধান নদিয়ার রানাঘাট এবং পাশে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ লোকসভা আসনে জিতেছিল বিজেপি। সে কথা মাথায় রেখেই সম্প্রতি বনগাঁয় ও তার পরে এ দিন রানাঘাটে এই নাগরিকত্বের প্রশ্নেই মতুয়া ও নমঃশুদ্রদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “মতুয়া ভাইবোনেরা আমার, নমঃশুদ্র ভাইবোনেরা আমার, আপনারা সবাই নাগরিক। আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলছি।’’
নাগরিকত্ব আইন তৈরি হলেও তা নিয়ে অসন্তোষ সামনে এনেছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া পরিবারের সদস্য শান্তনু ঠাকুর। মমতা এ দিন বলেন, ‘‘এত দিন ধরে এখানে স্কুল-কলেজে পড়েছেন, চাষবাস করেছেন, দোকানদারি করেছেন। কে কার নাগরিকত্ব কাড়তে পারে, এতই সহজ?” অসমের এনআরসি প্রসঙ্গ টেনে ২২ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ করে মমতা বলেন, “বাংলায় আমরা এ সব করি না। এনআরসি করতে দেব না, এনপিআর করতে দেব না!” মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে শুধু ভুল বোঝাচ্ছেন। তিনি নিজেও জানেন, ভোট দিলেই নাগরিক হওয়া যায় না। ভোটার কার্ডে তা লেখাও আছে।’’
এ দিন যত বার মমতা নাগরিকত্ব নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন, মুহুর্মুহু হাততালি পড়েছে। নদিয়া জেলায় পাঁচ হাজার পরিবারকে পাট্টা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় একটি উদ্বাস্তু পরিবারও থাকবে না, যারা পাট্টা পাবে না।” মতুয়াদের জন্য বোর্ড করে ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।