বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ছিল তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন। ছবি- সংগৃহীত
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ‘তৃণমূল চোরের দল’ বলে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে সব বিরোধীদল। তবে প্রথম থেকেই তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, দু’এক জনের জন্য সবাইকে ‘চোর’ বলা ঠিক নয়। বলেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার আরও স্পষ্ট করে তিনি বললেন, ‘‘তৃণমূলের ৯৯.৯ শতাংশ মানুষ সৎ। তাঁরা সমাজসেবা করতে চান। কারও কারও জন্য গোটা দলকে চোর বলে আক্রমণ করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।’’
বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ছিল তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন। প্রধান বক্তা হিসাবে মমতা ছাড়াও ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত সাংসদ, বিধায়ক, সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানরা। তেমনই ছিলেন রাজ্য থেকে শুরু করে জেলা ও ব্লক স্তরের নেতারা। পার্থ ও অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে দলের ভাবমূর্তিতে যে আঘাত লেগেছে, তার জবাবে কী বলা হবে, সে প্রসঙ্গ এই সমাবেশে যে উঠতে পারে আগেই তা আন্দাজ করা গিয়েছিল। অনুব্রতের গ্রেফতার হওয়া নিয়ে যে তৃণমূল কোনও ভাবেই চিন্তিত নয় সেটা বার বার বুঝিয়েছেন মমতা। তবে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে নগদ কোটি কোটি টাকা উদ্ধার নিয়ে দল যে এখনও অনেকটা চাপে তা স্পষ্ট। কোনও বক্তাই একটি বারের জন্যও পার্থের নামোচ্চারণ করেননি। আর মমতা ‘৯৯.৯ শতাংশ সৎ’ বলার পরে দলে অনেকের প্রশ্ন, যে .১ শতাংশকে নেত্রী ‘অসৎ’ বলেছেন, পার্থ কি তাদেরই এক জন?
কেন্দ্রীয় সরকার প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না বলে অনেক বার অভিযোগ করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার এক ধার এগিয়ে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না-দেওয়ায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজ যাতে পড়ে না থাকে, তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার ৫০ লাখ অনুরোধ পড়ে রয়েছে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে। কিন্তু ওরা (কেন্দ্র) এর টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। বিধায়ক এবং সাংসদদের অনুরোধ, প্লিজ আপনারা এমপি এবং এমএলএ ল্যাডের টাকাটা বাংলার বাড়ি প্রকল্পে খরচ করুন! সে ক্ষেত্রে যে ৫০ লাখ আবেদন পড়ে রয়েছে, সেগুলো করা সম্ভব হবে। এতে নিজের এলাকায় অনেক মানুষকে ঘর করে দিতে পারবেন। এটা গাইডলাইনে যোগ করে দেব।’’
শুধু সাংসদ, বিধায়কদেরই নয়, মমতা একই অনুরোধ করেন জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদেরও। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের যে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে, তা রাস্তা তৈরি এবং বাংলার বাড়ির কাজে ব্যবহার করুন। মানুষকে ভালবাসলে তারাও ভালবাসবে।’’ সেই প্রসঙ্গেই তৃণমূলের নেতাদের ৯৯.৯ শতাংশ সৎ বলে জানিয়ে দেন মমতা।